ঈদের আগের দিন তরমুজের দাম তলানিতে নেমেছিল। সেদিন বড় আকারের তরমুজ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। আর কেজি হিসেবে বিক্রি হয়েছিল ৩০-৪০ টাকায়। তবে ঈদের দিন পার হতেই সেই তরমুজ এখন প্রতি কেজি ৬০ টাকা হাঁকছেন বিক্রেতারা।

হঠাৎ তরমুজের এমন বাড়তি দামের বিষয়ে বিক্রেতারা বলছেন, তরমুজের মৌসুম শেষ হয়ে আসছে, তাই সরবরাহ কমেছে। সব মিলিয়ে নতুন করে পাইকারি বাজারে মালের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, মানুষ যখন তরমুজ বয়কট করেছিল তখন তাদের বিক্রি তলানিতে নেমেছিল, এবার উচিত শিক্ষা পেয়েছে অসাধু তরমুজ বিক্রেতারা। এখন আবার নতুন করে দাম বাড়াচ্ছে, মানুষ এবারও তরমুজ না কিনলে তারা সোজা হবে।

গত মাসে অর্থাৎ মার্চের শুরুতে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা দরে। রমজান শুরু হওয়ার পর সে দাম ৮০ টাকায় নামে। কিন্তু বেশি দামের পাশাপাশি অপরিপক্ব হওয়ায় তরমুজে আগ্রহ কম ছিল সাধারণের। এর মধ্যে ফেসবুকে তরমুজ ‘বয়কটের’ ডাক আসে। ফলে ফলটির বিকিকিনি কমে যায় আরও। রোজা শুরুর এক সপ্তাহ পর তরমুজ বিক্রি বলতে গেলে তলানিতে এসে ঠেকে। বিপাকে পড়েন বিক্রেতারা। সারা দিনে হাতেগোনা কয়েকটা বিক্রি হলেও বেশিরভাগই দোকানে অবিক্রীত থেকে যাচ্ছিল। এতে বাধ্য হয়ে ৪০ টাকায় নামিয়ে আনা হয় তরমুজের কেজি। শুধু তাই নয়, আকারভেদে সেই সময় পিস ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করেছে বিক্রেতারা। ‌তারপরও ক্রেতাদের বড় অংশ তখনও তরমুজ বিমুখ ছিল।

তবে রোজা শেষ হয়ে যাওয়ায় ও গরম বাড়তেই ফের তরমুজের দাম বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা।  

রাজধানীর গুলশান এলাকায় ফুটপাতে তরমজু সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতা মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, আগের যেসব মাল ছিল ঈদের আগের দিন পর্যন্ত তা ৪০ টাকা কেজি দরে এবং পিস হিসেবে বড়গুলো ২৫০ টাকায় বিক্রি করে শেষ করেছি। আজই নতুন করে তরমুজ এনেছি। এখন যেহেতু তরমুজের মৌসুম শেষ হয়ে যাচ্ছে, তাই বাজারে সরবরাহ কমেছে। পাইকারি বাজার থেকে আজ নতুন তরমুজ বেশি দামে কেনা পড়েছে, যে কারণে খুচরা বাজারেও আজ দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ আজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। সর্বোচ্চ আর ১০-১৫ দিন বাজারে তরমুজ পাওয়া যাবে। তাই শেষ সময়ে এসে তরমুজের দাম বেড়েছে। 

দোকানে সাজানো তরমুজ দেখে দাম করছিলেন পথচারী জুবায়ের আহমেদ। দাম শুনে জুবায়ের আহমেদ বলেন, মানুষ যখন তরমুজ কেনা বাদ দিয়েছিল তখন এসব বিক্রেতারা সোজা হয়েছিল। তাদেরকে এভাবেই উচিত শিক্ষা দেওয়া উচিত। এতদিনেও তাদের লজ্জা হয়নি, আজ আবার হঠাৎ করে তরমুজের দাম বাড়িয়ে ৬০ টাকা কেজি চায়। আবার যদি মানুষ তরমুজ বয়কট করে তাহলে এরা জীবনেও আর দাম বাড়ানোর সাহস পাবে না। দোকানে তরমুজ পচেছে, শেষে বাধ্য হয়ে তারা দাম কমিয়েছে। এখন আবার বাড়ানোর পাঁয়তারা, আবার যদি মানুষ কেনা বাদ দেয় তখন আবার তাদের দোকানে তরমুজগুলো পচে যাবে।

এএসএস/জেডএস