রাজধানীর হাজারীবাগে ১১ মাসের বেতন ও ঈদের ছুটি না পেয়ে রেজাউল মোল্লা (২২) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পরিবারের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রেজাউল রাজবাড়ি সদরের মো. আবু মোল্লার ছেলে। তিনি হাজারীবাগের শিকদার মেডিকেলের পাশে এ বি এন্টারপ্রাইজ নামের একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ওই প্রতিষ্ঠানের গোডাউনেই থাকতেন তিনি।

মৃত রেজাউল মোল্লার ভাই আমিন জানান, আমার ভাই সিকদার মেডিকেলের পেছনে এ বি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে কাজ করে। গত ১১ মাসের বেতন ওই প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা ছিল আমার ভাই। গত কোরবানি থেকে এই রোজার ঈদ পর্যন্ত তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। ঈদুল ফিতরে ছুটি চাইলেও রাজি হয়নি তার মালিক। যদিও আমার ভাইয়ের কাছে মালিকপক্ষ ৪৩ হাজার টাকা পাওনা ছিল। এ নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আমাদের একাধিকবার কথা হয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন হলো, আমার ভাই যদি অপরাধী হতো বা ওই প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো দুর্নীতি করত তাহলে তো মালিকপক্ষ পুলিশকে জানাতে পারত অথবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করতে পারত। কিন্তু সেটি না করে উল্টো তার ১১ মাসের বকেয়া বেতন আটকে রাখে মালিকপক্ষ।

তিনি আরও বলেন, ওর বেতন যদি প্রতি মাসে ১২ হাজার টাকা ধরা হয় তাহলে ১১ মাসে তার বকেয়া বেতন গিয়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা। বকেয়া পাওনার হিসাবে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আমার ভাইয়ের কাছ থেকে পাওনা টাকা কেটে নেওয়ার পরও আরও বেশ কিছু টাকা আমার ভাই পাওনা থাকে। তারা ঈদুল ফিতরের ছুটিতেও আমার ভাইকে বাড়ি যেতে দেয়নি, বরং তার বেতনের বকেয়া টাকা আটকে রেখেছে।

আমিন বলেন, গতকাল বিকেল ৪টার দিকে আমাদের ফোন করে মালিকপক্ষ জানায় আমার ভাই নাকি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি তো আমার ভাইকে চিনি। সে কিছুতেই পবিত্র ঈদের দিনে ফাঁসি দিয়ে ঝুলতে পারে না। আমার ভাই তো ঋণী ছিল না কারও কাছে। সে তো উল্টো পাওনা ছিল মালিক পক্ষের কাছে।

কান্না বিজড়িত কণ্ঠে তিনি অভিযোগ করেন, বকেয়া বেতন চাওয়ার অপরাধে পবিত্র ঈদের দিনে আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ তদন্ত করছে।

এসএএ/এসএসএইচ