রাজধানীতে মোটরসাইকেলে থাকা এক নারীর গলা থেকে সোনার চেইন টান দিয়ে ছিনিয়ে নিচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। এ সময় ছিনতাইয়ে বাধা দিতে যান পেছনের থাকা একটি মোটরসাইকেলের আরেক আরোহী। বাধা দিতে গেলে ছিনতাইকারীর চাপাতির কোপে ওই আরোহী গুরুতর আহত হন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হওয়ায় তাকে তাৎক্ষণিক সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।

রোববার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটের দিকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র পার হয়ে আগারগাঁও সিগন্যালের মাথায় এ ঘটনা ঘটে। 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ‌সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটের দিকে আসা সড়কে থাকা যানবাহনগুলো আগারগাঁও সিগন্যালে আটকে ছিল। পথচারীর বেশে দুইজন ছিনতাইকারী ফুটপাত দিয়ে হেঁটে এসে মোটরসাইকেলের পেছনে বসা এক নারীর গলায় থাকা সোনার চেইন টান দিয়ে দেয়। এ সময় পেছনের মোটরসাইকেলে বসা একজন আরোহী ছিনতাইকারীদের বাধা দেন। 

পরে আরও আরেকজন মোটরসাইকেল আরোহী এগিয়ে এসে ছিনতাইকারীদের বাধা দেন। এ সময় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হলে ছিনতাইকারীরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। আশপাশে অনেকে থাকলেও কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে যায়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছিনতাইকারীরা ঘটনার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের পেছনের নার্সারিতে প্রবেশ করে। এরপর বেগম রোকেয়া সরণির মূল সড়ক পার হয়ে আগারগাঁও ফুল মার্কেটের পেছনের বস্তির দিকে পালিয়ে যায়। 

এ এলাকার চারপাশে এক কিলোমিটারের মধ্যে জাতীয় সংসদ ভবন, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ সরকারি গুরুত্বপূর্ণ সব শাখার প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। এমন ব্যস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকার কেন্দ্রে সন্ধ্যার পরপরই এমন ঘটনায় আশেপাশে উপস্থিত সবাই হতবাক এবং ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। 

এ বিষয়ে শেরে-বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহাদ আলীর সঙ্গে ঢাকা পোস্টের কথা হয়। প্রথমে তিনি কাফরুল থানার সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি নিজেই বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

ডিএমপি বলছে, ছিনতাই ঠেকাতে রাজধানীতে ২৮টি হটস্পটসহ মোট শতাধিক স্পট চিহ্নিত করে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী কাজ করছে, অথচ ২৮টি হটস্পটের মধ্যে এই এলাকাও রয়েছে। রাজধানীবাসীকে ছিনতাইয়ের হাত থেকে নিরাপত্তা দিতে ডিএমপির এ শাখা বিভিন্ন কৌশলে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।

ছিনতাই প্রতিরোধে সর্বশেষ গত বছরের ৭ অক্টোবর ডিএমপি সদর দপ্তরের উপকমিশনারকে (অপরাধ বিভাগ) সভাপতি করে ১৯ সদস্যবিশিষ্ট টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে ছিনতাইকারীরা কখন, কোথায়, কোন প্রক্রিয়ায় ছিনতাই করে সেসব তথ্য সংগ্রহ, প্রতিরোধ এবং ছিনতাইয়ে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার বিষয়ে ডিএমপির সব ইউনিটকে চিঠি দেওয়া হয়।

এমএসি/কেএ