অবসরপ্রাপ্ত দুদক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ / ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানায় পুলিশ হেফাজতে অবসরপ্রাপ্ত দুদক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় এসএম আসাদুজ্জামান (৫২) নামে আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ নিয়ে মামলাটিতে মোট নয় আসামির মধ্যে মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলো। 

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন মোজাফফর নগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসাদুজ্জামান চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খাঁন জানান, অবসরপ্রাপ্ত দুদক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের মামলার আসামি আসাদুজ্জামানকে বায়েজিদ বোস্তামীর মোজাফফর নগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে পিবিআই মেট্রো ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

গত বছরের ১৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালতে অবসরপ্রাপ্ত দুদক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রী ফৌজিয়া আনোয়ার নয়জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন। পরে থানায় মামলাটি রেকর্ড করার আদেশ দেন আদালত।

মামলার আসামিরা হলেন, চান্দগাঁও থানার তৎকালীন ওসি মো. খাইরুল ইসলাম, এএসআই মো. ইউসুফ, এএসআই সোহেল রানা, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মবিনুল হক, চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা এসএম আসাদুজ্জামান (৫২), মো. জসীম উদ্দীন, মো. লিটন, রনি আক্তার তানিয়া (২৬) ও কলি আক্তার (১৯)।

এর মধ্যে, গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর রাতে বাকলিয়া থানার রাহাত্তালপুল এলাকা থেকে একই মামলার আসামি জসীম উদ্দীন ও গত ১২ ফেব্রুয়ারি নগরের চকবাজার এলাকা থেকে আসামি মো. লিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ২০১৮ সালে দুদকের উপ-পরিচালক (ডিডি) পদ থেকে অবসর নেন। তিনি নগরের চান্দগাঁও থানার এক কিলোমিটার এলাকায় বসবাস করতেন। সেখানে জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে বছরের গত ২৯ আগস্ট ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও তার শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারের বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের মামলা করেন রনি আক্তার তানিয়া নামে এক ব্যক্তি। মামলার শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ওইদিনই অপরাধ আমলে নিয়ে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।  

ওই সমন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন অর রশীদ গায়েব করে ফেলেন। ফলে আসামিরা আদালতে হাজির হওয়ার কোনো সমন পাননি। এরপর মামলার পরবর্তী তারিখ দেন আদালত। ওই তারিখে মামলার বাদী হাজির না হওয়ায় তার আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন।

কিন্তু ওইদিনই আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে দেন। এরপর গত বছরের ৩ অক্টোবর রাতে শহীদুল্লাহকে বাসা থেকে আদালতের ওয়ারেন্ট দেখিয়ে গ্রেপ্তার করে নগরের চান্দগাঁও থানা পুলিশ। থানায় নেওয়ার পর ভুক্তভোগী শহীদুল্লাহকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র মৃত্যু হয়।

আরএমএন/কেএ