সাতকানিয়ায় একাধিক মামলার আসামি ‘বগা দেলোয়ার’ গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার আলোচিত সেই সন্ত্রাসী দেলোয়ার হোসেন ওরফে বগা ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে উপজেলার পশ্চিম আমিলাইশ এলাকা থেকে তাকে করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, একটি মাদক মামলার সাজা পরোয়ানার ভিত্তিতে বগা দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার দেলোয়ার ডাকাতি, মাদক, হত্যা ও মারামারি মামলার আসামি। সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতার কারণে আলোচিত ছিলেন বগা দেলোয়ার। ওইসময় নির্বাচনী বহরে হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া একাধিক মামলার আসামি তিনি।
বিজ্ঞাপন
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার বলেন, ইয়াবা মামলার সাজা পরোয়ানা মূলে মো. দেলোয়ার হোসেন ওরফে বগাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সাতকানিয়া ও বাকলিয়া থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। আজ (শুক্রবার) তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেবের হয়ে নানা সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে দেলোয়ার হোসেন বগা। প্রায় প্রতিদিনই প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালিয়েছে বগা বাহিনী। গত তিনমাসে সাতকানিয়ার চরতি-আমিলাইশ এলাকায় অন্তত ২২টি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।
থানা পুলিশ জানিয়েছে, এর মধ্যে কমপক্ষে ১০টি অভিযোগ জমা পড়েছে এই বাহিনীর বিরুদ্ধে। বাকিরা ভয়ে মুখ খুলেননি। এর মধ্যে নির্বাচনের আগে ২১ ডিসেম্বর উপজেলার দক্ষিণ চরতী কাটাখালী ব্রিজের পাশে নৌকার পথ সভায় অস্ত্র ও লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায় বগা বাহিনী। এসময় নৌকা সমর্থক চরতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুহুল্লাহ চৌধুরী, সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান, মিছদাকুল বেসারত চৌধুরী, মোহাম্মদ রফিক, রবিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ ফয়সালসহ কমপক্ষে ৮-১০ জন আহত হন।
এর দুদিন আগে ১৯ ডিসেম্বরও নৌকার পথসভা শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য ইলিয়াছ শাহীনকে মারধর করে সাইফুল বাহিনী। ওইদিনও ইলিয়াছ শাহীনের ফার্মাসি ও কৃষক লীগ নেতা ফারুককে বাড়ি-দোকানে হামলার ঘটনা ঘটে।
নির্বাচনের দিন অর্থাৎ ৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় দক্ষিণ চরতিতে নৌকার সমর্থকদের বাড়ি-ঘর ও দোকানে হামলা ও লুটপাট চালায় বগা বাহিনী। এসময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য ইলিয়াছ শাহীনের ফার্মেসি ও কৃষক লীগ নেতা ফারুকের বাড়ি ও ডেকোরেশনের দোকানে লুটপাট ও ভাঙচুর চালানো হয়। নির্বাচনের পরের দিন চরতী ইউনিয়নের খতিরহাট এলাকায় নৌকা সমর্থক জিল্লুর রহমানকেও মারধর করে।
দক্ষিণ চরতি ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আমিন বলেন, আমি ও আমার পরিবার যুগের পর যুগ আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছি। একই দল থেকে দলীয় এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় আমি ঈগলের পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিলেও আমার ছোট ভাই ইলিয়াছ মেম্বার নৌকার হয়ে কাজ করেন। কিন্তু দফায় দফায় তার ওপর হামলা ও দোকান ভাঙচুর এলাকার সম্প্রীতি নষ্ট করছে।
এমআর/এসকেডি