সারা দেশে খেটে খাওয়া মানুষের কর্মসংস্থান উচ্ছেদ করাকেই পদক্ষেপ হিসেবে গ্রহণ করেছে সরকার। তারা নির্বিচারে সারা দেশে হকার, ব্যাটারিচালিত যানবাহন, দিনমজুরদের রুটি-রুজির অবলম্বন বন্ধ করার অভিযান পরিচালনা করছে। তাই উচ্ছেদ করা হকারদের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের নেতারা পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার মোড় থেকে সদরঘাট পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করে এ দাবি জানান।

পুরান ঢাকার বংশাল, কোতোয়ালি, সূত্রাপুর ও সদরঘাট এলাকায় নির্বিচারে হকার উচ্ছেদ ও মালামাল ধ্বংসের প্রতিবাদে এবং জীবিকা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ না করার দাবিতে মিছিলটি করা হয়। পরে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

সমাবেশে হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হাশিম কবীর বলেন, অবিলম্বে পুনর্বাসন বা বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ছাড়া সব উচ্ছেদ ও জুলুম-নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সর্বত্র ক্ষমতাসীনদের মধ্যে নতুন করে দখল ও বণ্টন চলছে। তারই অংশ হিসেবে গরিব খেটে খাওয়া মানুষদের কর্মসংস্থান থেকে উচ্ছেদ করে শত কোটি টাকার চাঁদা বাণিজ্যে নতুন কর্ণধার নির্ধারণ করতে মানুষকে নিঃস্ব করা হচ্ছে।

হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সম্পর্কে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করলেই বাজার পরিস্থিতি আরও বেসামাল হচ্ছে। খেটে খাওয়া মানুষ বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে কোনো মতে বাঁচতে পারছে না। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেও মানুষের কর্মসংস্থান কেড়ে নিচ্ছে। সারা দেশের মেহনতি জনতাকে জুলুমের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে।

সমাবেশে অন্যান্যরা বলেন, চলমান হকার উচ্ছেদ বন্ধ না হলে লক্ষাধিক হকার পথে বসবে। সরকার বড় বড় পুঁজির মালিকদের নানান সুবিধা দিলেও ক্ষুদ্র পুঁজির এ ব্যবসার ওপর আঘাত করছে। হকারি করে জীবিকা নির্বাহ করা একটি প্রচলিত পেশা। নগর ও জনপদ বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এ পেশার ব্যাপ্তি এবং পরিসর আজকের রূপ লাভ করেছে। একইসঙ্গে দীর্ঘসময় ধরে এই দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের রুটি-রুজির অর্থনৈতিক কাজের সঙ্গে নানা কায়েমি স্বার্থ জড়িত হয়েছে। নগর উন্নয়নে হাজার হাজার প্রকল্প এবং বিপুল অর্থ ব্যয় হলেও কখনোই বিপুল হকার জনগোষ্ঠীর জন্য স্থায়ী পুনর্বাসন, টেকসই প্রকল্প গৃহীত হয়নি।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সাংগঠনিক জসিম উদ্দিন, সহকারী সাধারণ সম্পাদক আনিস পাটোয়ারী, কেন্দ্রীয় নেতা মো. ফিরোজ, রাকিব প্রমুখ।

এমএইচএন/এসএসএইচ