পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে শেষ হওয়ার কথা ছিল পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের দুটি প্রকল্পের কাজ। সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের তালিকাভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও প্রকল্পগুলোর সময় ও ব্যয় বেড়েছে। এ অঞ্চলের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে প্রকল্প দুটি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

দেশের মেগা প্রকল্পগুলোর সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে প্রতিমাসে প্রতিবেদন তৈরি করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। পরে প্রতিবেদনটি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়সহ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠায় ইআরডি। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২৫ দশমিক ১১ শতাংশ। যার ফলে এই মেগা প্রকল্পে চলতি অর্থবছরে বরাদ্দের টাকা ব্যয় করতে পারা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতিতে বলা হয়েছে, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পটি ৩ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে প্রকল্পের কাজ। চলতি অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ৫০৪ কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬৫১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। গত ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত অর্থাৎ ইআরডির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রকল্পে খরচ হয়েছে ১১৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৫ দশমিক ১১ শতাংশ।

পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর প্রসঙ্গে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, করোনা মহামারির ক্ষতিকর প্রভাব সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়নের ওপর পড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এর মধ্যেও মেগা প্রকল্পগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থায় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ভেতরে লোকজনকে রেখেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। তবে এ প্রকল্পটির বছর শেষে অর্থ ব্যয় আরও বাড়বে।

অন্যদিকে আইএমইডির তথ্য মতে, পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ প্রকল্পটির বাস্তবায়নের সময় ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী এনে মেয়াদকাল বাড়িয়ে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে। তিন হাজার ৯৮২ কোটি টাকা থেকে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয়েছে চার হাজার ৫১৭ কোটি টাকা। 

প্রকল্পটির বিষয়ে আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, প্রকল্পের বিভিন্ন অংশের কাজ চলমান। প্রকল্পটি গত ফেব্রুয়ারিতে পরিদর্শন করেছি। আমার পরিদর্শনের তথ্য অনুযায়ী তখন প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি ছিল ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি ছিল ৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। বড় প্রকল্প হওয়ায় সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করে দ্রুত প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

এসআর/এসএসএইচ