সুন্দরবনের তীরবর্তী দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে ঝুঁকিতে থাকা বেড়িবাঁধগুলো দ্রুত সংস্কারসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে সুন্দরবন ও উপকূলীয় সুরক্ষা আন্দোলন। শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো জানানো হয়।

সংগঠনটির অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে- জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা; বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরি তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করা; পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ১০০ মিটারের মধ্যে চিংড়ি ঘের তৈরিতে সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা দ্রুত কার্যকর করা; উপকূলীয় জনগণের নিরাপদ খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এবং উপকূলের উন্নয়নের পৃথক বোর্ড গঠন করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার মধ্যে গত বছর ২০ মে সুপার সাইক্লোন আম্পান উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধ ভেঙে খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চলে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই এলাকাগুলোর জীবন-জীবিকা। ঝড়ের পর টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। অন্যদিকে ২০০৯ সালের সুপার ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে ও পরে ওই এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণের বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও তার কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের অন্তত ৪৮২ কিলোমিটার এলাকা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা উপকূলীয় এলাকা পরিদর্শন করেন। ওই সময় ভাঙন কবলিত এলাকার বাঁধ জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কয়েকটি মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়। এরমধ্যে খুলনার ১৪ নং পোল্ডারে ৯৫৭ কোটি ৩৮ লাখ ও ৩১নং পোল্ডারে ১২০ কোটি ২০১ লাখ এবং সাতক্ষীরার ৫নং পোল্ডারে ৩ হাজার ৬৭৪ কোটি ৩ লাখ ও ১৫নং পোল্ডারে ৯৯৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কিন্তু এখনো সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন শুরু হয়নি।

এমএইচএন/এমএইচএস