করোনার বিধিনিষেধের মধ্যে ঈদের কেনাকাটা থেমে নেই। অনেকটা উৎসবের আমেজেই চলছে কেনাকাটা। শপিংমলগুলোতে নারী ক্রেতারাই ভিড় জমাচ্ছেন বেশি। সঙ্গে আনছেন শিশুদের। 

রোববার (২ মে) রাজধানাীর উত্তরার রাজলক্ষ্মী, জসীমউদ্দিন, ৫ নং সেক্টরসহ বিভিন্ন শপিংমল ও ফুটপাত ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে, কেউবা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। 

কেনাকাটার সময় অধিকাংশ ক্রেতার মুখেই মাস্ক দেখা গেছে। তবে বালাই নেই সামাজিক দূরত্বের। দোকানীরা ক্রেতা সামলাতে ব্যস্ত। তবে দোকানগুলোতে নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ ক্রেতাদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার কোনো প্রস্তুতি। 

উত্তরায় শপিংয়ের ব্যস্ততা/ ছবি- ঢাকা পোস্ট 

রাজধানীর উত্তরার রাজলক্ষ্মী শপিং মলে দেখা গেল, নারী ক্রেতারা তাদের পছন্দমতো পোশাক খুঁজছেন। কেউ বা শিশুর জামার মাপ দিয়ে দেখছেন ঠিক আছে কি না। নিজের পছন্দমতো পোশাক খুঁজতে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ছুটছেন তারা।

কেমন হচ্ছে বিকিকিনি জানতে চাইলে পোশাক বিক্রেতা হজরত আলী ঢাকা পোস্টকে জানান, বিক্রি হচ্ছে। তবে বলা যায়- নাই মামার চেয়ে কানা ভালো ধরনের। স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে তিনভাগের এক ভাগ ক্রেতাও নেই। গত বছরের আগের বছরগুলোতে এ সময়ে কারও সঙ্গে কথা বলার সময় পাওয়া যেত না। সেই তুলনায় ক্রেতার উপস্থিতি নেই বললেই চলে।

তিনি জানান, এই করোনাকালে অর্থনৈতিক মন্দা ও স্বাস্থ্যঝুঁকির ভেতর যা বিক্রি হচ্ছে তাতে আমরা অবাকই বলতে পারেন। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বিক্রি যদিও কম , তবে চেনাজানা সব ব্যবসায়ী এতেই খুশি।

শপিংমল থেকে বের হয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন প্রকৌশলী মো. রেদওয়ানুল হক। আলাপকালে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসলে স্বাস্থ্যবিধি বলতে অধিকাংশের মুখে মাস্ক দেখা গেছে। তাছাড়া যে যার মতো করে চলছেন। সবাই নিজের কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত দেখলাম। আমরাও চেষ্টা করছি দ্রুত কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি ফিরতে। 

একে করোনা মহামারি অন্যদিকে বিধিনিষেধ তারপরও শপিংমলে এসেছেন কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে রেদওয়ানুল হক বলেন, উপায় নেই। নিজের জন্যে কিছু কিনি নাই। কিন্তু পরিবারের শিশুদের জন্যে এ সময়ে না কিনলে তারা খুব মন খারাপ করবে। এমনিতেই লকডাউনে তারা মানসিকভাবে একেবারেই অস্থির সময় পার করছে। তারপর যদি ঈদের দিন তাদের কিছু উপহার দিয়ে খুশি না করা যায় তাহলে তারা আরও হতাশাগ্রস্ত হয়ে যাবে। এসব চিন্তা করেই বাজারে আসা।

আলাপকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রেতা জানান, আসলে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কেনাকাটার চেষ্টা করেছি। পরিবারের সবাই খুব করে ধরল। তাছাড়া এ সময়ে যে আহামরি কেনাকাটা করা হচ্ছে তা কিন্তু নয়।

সরেজমিনে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, মূলত পোশাকের দোকানগুলোতেই ঈদের কেনাকাটার জন্যে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন। অধিকাংশ শপিংমলের মূল ফটকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও ক্রেতারা খুব বেশি ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিকেলের পর এসব দোকানে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়ে যায়।

একে/এইচকে