সড়কে গাড়ির চাপ/ ছবি : শাকিল আহাম্মদ

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের মধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে শপিংমল-বিপণিবিতান। এতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে মানুষের উপস্থিতি বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। এতে করে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

সরকারি বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে তদারকি করা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তেমন কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। ‘নামকাওয়াস্তে’ রাস্তায় চেকপোস্ট থাকলেও নেই কোনো কার্যক্রম। ফলে সরকারি বিধিনিষেধ সত্ত্বেও রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে বেড়েছে ব্যস্ততা। 

পথচারী ও যানবাহন চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিকাংশ মানুষের গন্তব্য এখন শপিংমল ও পথের পাশের দোকান। ঈদ যতই এগোচ্ছে, ততই কেনাকাটার জন্য রাজধানীবাসী উন্মুখ হয়ে পড়ছেন। এ কারণেই মূলত সড়কে চলাচল বেড়েছে। এতে সড়কে বিভিন্ন যান বিশেষ করে ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশার আধিক্য রয়েছে। 

সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর মেরুল বাড্ডা, লিংক রোড, উত্তর বাড্ডা, নতুন বাজার, কোকাকোলা মোড়, নদ্দা, যমুনা ফিউচার পার্ক ও বনানী এলাকায় ঘুরে যানজটের চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, এসব অঞ্চলের সড়ক দুপুর থেকেই প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও পিকআপ ভ্যানে পরিপূর্ণ। কোনো কোনো সড়কে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আটকে থাকছে যানবাহনগুলো। এছাড়া এসব এলাকায় ফুটপাতে বসেছে পোশাকসহ নানা পণ্যের ভাসমান দোকান। এসব দোকানে ক্রেতার কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই কেনাকাটা করছেন। 

এসব দোকানে আসা ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে মানুষ ফুটপাতের ভাসমান দোকান ও শপিংমলগুলোতে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ কারণেই সড়কে বেশি মানুষের উপস্থিতি। সড়কে উপস্থিতি বাড়লে যানবাহনও বাড়বে। আর যানবাহনের সংখ্যা বাড়লে জট সৃষ্টি স্বাভাবিক।

রাজধানীর নদ্দা এলাকায় যানজটে আটকে থাকা যাত্রী আয়েশা বিনতে সায়মা জানান, রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক শপিংমলে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন। বাসা থেকে বের হয়ে সিএনজিতে ওঠার পর থেকে কিছুক্ষণ পর পর ১০ থেকে ২০ মিনিটের যানজটে আটকে থাকতে হয়েছে। সর্বশেষ নদ্দায় এসে ১৫ মিনিট ধরে যানজটে আটকে রয়েছেন।

এদিকে এসব রাস্তায় চলাচল করা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাস্তায় চলাচল করতে এখন তাদের আর পুলিশের চেকপোস্টের মুখে পড়তে হচ্ছে না। কোনো ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই তারা যাত্রী আনা-নেওয়া করতে পারছেন। তাদের অধিকাংশই যাত্রী এখন শপিংমলে যাচ্ছেন।

উত্তর বাড্ডার সড়কে যাত্রীর জন্য অপেক্ষমাণ সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক সাদেক হোসেন বলেন, সকাল থেকে পাঁচজন যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছি। এদের মধ্যে চারজনই শপিংমলে গিয়েছিলেন। দুপুরের আগে যানজট না থাকলেও দুপুরের পর রাস্তায় অনেক গাড়ি বের হওয়ার কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বনানীর কাকলি এলাকার রাস্তায় দুপুরের দিকে আধঘণ্টার বেশি সময় ধরে যাত্রী নিয়ে যানজটে বসে থাকতে হয়েছে।

এদিকে মেরুল বাড্ডা থেকে কোকাকোলা মোড় পর্যন্ত তিনটি পুলিশ চেকপোস্টে কর্মরত মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শপিংমলকেন্দ্রিক মানুষজনের কারণে যাত্রায় রাস্তায় যাত্রী এবং গাড়ির চাপ অনেক বেশি। ফলে এত মানুষের মুভমেন্ট পাস চেক করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে তাদের পক্ষ থেকে যতটুক সম্ভব সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য গাড়ির চালক এবং যাত্রীদের বোঝানো হচ্ছে। এছাড়া ক্ষেত্র বিশেষে জরিমানাও করা হচ্ছে।

এমএসি/আরএইচ