কখনো ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কখনো মন্ত্রী-এমপির ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয় দিয়ে কথা বলতেন। হজে যেতে ইচ্ছুক সহজ-সরল লোকদের বলতেন ‘আপনি পবিত্র হজ পালনের জন্য মনোনীত হয়েছেন। তবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করতে হলে নিবন্ধন বাবদ সাড়ে ৭ হাজার টাকা বিকাশ বা নগদে পাঠাতে হবে। টাকা দিলেই কেবল মনোনয়ন পাবেন।’ আগ্রহীরা সম্মত হলে একটি বিকাশ বা নগদ নম্বর দিয়ে টাকা পাঠাতে বলতেন।

এভাবেই অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ চক্রটির মূলহোতা মো. নজরুল ইসলামকে (৫৮) গ্রেফতার করেছে।

এর আগে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম শাহবাগ থানার একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে প্রতারক চক্রের মূলহোতা মো. নজরুল ইসলামকে খুলনা থেকে গ্রেফতার করে।

আরও পড়ুন : হজে পাঠানোর নামে প্রতারণা সম্পর্কে সতর্ক করল ধর্ম মন্ত্রণালয়

এ সময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন, তিনটি সিম কার্ড ও নগদ ৫ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়।

বুধবার (৫ মে) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, গত ২৬ এপ্রিল মফিজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে ফোন দিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্য এক এমপির ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয় দিয়ে বলে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার ব্যবস্থা করে দেবে। নিবন্ধন বাবদ সাড়ে সাত হাজার টাকা লাগবে। অন্যথায় হজ করা হবে না। এ বিষয়ে চাটখিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

তিনি বলেন, একই ধরনের ঘটনা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটতে থাকলে ভুক্তভোগীরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কল সেন্টারে ফোন দিয়ে জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুহা. ইয়াকুব আলী জুলমাতি বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। প্রাথমিক তদন্তে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কৌশলে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ প্রতারণার কাজে তারা ভুয়া নিবন্ধিত ২০-২৫টি সিম ব্যবহার করতো যাতে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব না হয়।

জেইউ/এসকেডি