চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দেশটিতে সাড়ে ৬২ হাজার শরণার্থী গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যান্য দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি এই ঘোষণার অধীনে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি অংশকে শরাণার্থী হিসেবে গ্রহণ করার জন্য ওয়াশিংটনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা।

বৃহস্পতিবার (৬ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের গ্রহণের অনুরোধ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

গত ৩ মে হোয়াইট হাউসে এক ঘোষণায় বলা হয়, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র ৬২ হাজার ৫০০ শরণার্থী গ্রহণ করবে। সেই সঙ্গে আগামী বছর থেকে বার্ষিক শরণার্থী গ্রহণের সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার করার জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ।

বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শরণার্থী গ্রহণের ঘোষণাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মোমেন আশা প্রকাশ করেন, রোহিঙ্গাদের সহযোগিতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দাতা রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। তিনি ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা কামনা করেন।

জবাবে রাষ্ট্রদূত মিলার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভিহিত করেন, চলতি বছরের ১৮ মে জেনেভায় রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থায়নে অনুষ্ঠেয় যৌথ সাড়াদান প্রক্রিয়ায় (জেআরপ) তার দেশ পুনরায় বিরাট অংকের সহযোগিতা করবে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। 

এদিকে, বৈঠকে বাংলাদেশি যেসব শিক্ষার্থী ভিসা জটিলতায় যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারছেন না, তাদের ভিসা ইস্যু সমাধানের জন্যও রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভিসা পাচ্ছেন না। তাদের ভর্তি ও বৃত্তি হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। জবাবে রাষ্ট্রদূত জানান, লকডাউন পরিস্থিতির কারণে অনেক সাক্ষাৎকারের স্লট বাতিল করতে হয়েছিল। তবে লকডাউন শেষ হওয়ার পর ভিসা আবেদনকারী সব শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাক্ষাৎকারের সুযোগ দেওয়া হবে।

বিভিন্ন সূত্র বলছে, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে তিন হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের কারণে ভিসা জটিলতায় অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন বিদেশে পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা।

বৈঠকে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় ইস্যু, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন তথা অভিযোজন ও প্রশমন নিয়ে চলতি বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠেয় কোপ-২৬ সম্মেলন নিয়ে আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন ও রবার্ট মিলার।

এনআই/এমএইচএস/জেএস