১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে না ফেরার দেশে কলেজছাত্র ইমন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পেটে গুলিবিদ্ধ কলেজছাত্র ইমন (১৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি টাঙ্গাইলের মনিরুজ্জামান খান বিএম কলেজের ছাত্র ছিলেন।
রোববার (১৮ আগস্ট) সকালে সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
বিজ্ঞাপন
ইমন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের নলিন এলাকার মৃত মো. জুলহাস শেখের ছেলে।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
নিহত ইমনের সহপাঠী সাইফুল ইসলাম জানান, টাঙ্গাইলের হেমনগর ইউনিয়নের ছাত্র অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক ছিলেন ইমন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সামনের সারিতে ছিলেন তিনি। গত ৪ আগস্ট বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের গোরাইতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় পুলিশের একটি গুলি ইমনের বুকে আঘাত করে পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়।
পরে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রোববার সকালে মৃত্যু হয়।
ইমনের সহপাঠী সাইফুল আরও জানান, ১০ বছর বয়সে বাবা হারানো চারজনের পরিবারে ইমনই ছিলেন একমাত্র কর্মক্ষম। ফলে ছেলের চিকিৎসার ব্যয় বহনে এরইমধ্যে সহায় সম্বল বিক্রি করেছেন মা রিনা বেগম। বাবার মৃত্যুর পর ইমনই হয়ে ওঠেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম। পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করে হাল ধরেন পরিবারের। ইমনের ছোট আরও দুই ভাই আর এক বোনে রয়েছে। সংসারে হাল ধরতে মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন মা রিনা বেগম।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ৪ আগস্ট মির্জাপুরের গোরাই এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ছাত্র-জনতার। এ সময় পুলিশের একটি বুলেট ইমনের পেট দিয়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়। আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এসএএ/এমএসএ