গাবতলী সড়কে ঘরমুখী মানুষের চলাচল

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের সহকারী অ্যাকাউন্টস অফিসার মো. ইসমাইল হোসেন। ঈদ উপলক্ষে অফিস ছুটি পেয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে ছুটছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগেই পরিবারের অন্যদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এখন যেকোনো উপায়ে বাড়ি যেতে মরিয়া মো. ইসমাইল হোসেন।

মঙ্গলবার (১১ মে) রাজধানীর আমিনবাজার এলাকায় ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় ইসমাইল হোসেনের। তিনি বলেন, পরিবার ছাড়া কখনও ঈদ করিনি। এবারও করব না। এজন্য ছুটি পেয়ে বাড়ির পথে রওনা হয়েছি। যেকোনো কিছুর বিনিময়ে বাড়িতে যেতে হবে। যেহেতু আমি একা যাচ্ছি, সেহেতু বেশি সমস্যা হবে না। এই মনে করেন, মহাখালী থেকে বাসে গাবতলী এসেছি; গাবতলী থেকে হেঁটে আমিনবাজার এলাম। এখান থেকে ঘাটের গাড়ি অনেক। আশা করি কোনো সমস্যা হবে না। 

এদিকে, ঈদের বাকি আছে মাত্র দুদিন। সরকারের বিধিনিষেধের মধ্যেও শেষ সময়ে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন হাজারো মানুষ। মঙ্গলবার গাবতলী ও আমিনবাজার এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। ট্রাক, মিনিট্রাক, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে চড়ে কর্মমুখী মানুষদের ঢাকা ছাড়তে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অমান্য করে সাধারণ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতেও পড়তে হচ্ছে তাদের। ঢাকা ছেড়ে যাওয়া এসব মানুষের অধিকাংশই শ্রমজীবী। 
ঘরে ফেরা মানুষ বলছেন, ঈদ উপলক্ষে আজ থেকে অফিস ছুটি হয়ে গেছে। তাই বাড়ি যাচ্ছি। লকডাউনের কারণে বাস বন্ধ থাকায় অনেক সমস্যায় পড়েছি। কিন্তু কী আর করা? বাড়ি তো যেতেই হবে। ঢাকায় থেকে কোনো লাভ নেই। এভাবে লকডাউনের মধ্যে ঢাকায় থেকে রোজা রাখা বা ঈদ করা মুশকিল। 

রাজশাহীগামী মোতাহার এই প্রতিবেদককে বলেন, আগে বাস চালিয়ে দিনে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতাম। লকডাউন দেওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন বেকার ছিলাম। যদিও কয়েকদিন আগে বাস চালু করেছে, কিন্তু আগের মতো আয় নেই। মা বাড়ি যেতে বলেছেন। তাই গ্রামে যাচ্ছি। লকডাউন উঠে গেলে আবার ফিরব।

মাইক্রোবাসচালক মোহাম্মদ রুবেল হোসেন বলেন, করোনার কারণে বাস বন্ধ রয়েছে। সামনে ঈদ, তাই গত কয়েকদিন ধরেই মানুষ গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। তবে আজ অধিকাংশ অফিস আদালত ছুটি হয়ে যাবে ঈদ উপলক্ষে। তাই আজ দুপুর থেকেই যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। হয়তো বিকেল নাগাদ এই চাপ আরও বাড়বে। 

এদিকে গাবতলী, কল্যাণপুর, শ্যামলী এলাকায় দেখা গেছে, সকাল থেকে এসব সড়কে রয়েছে যানজট। এসব সড়কে দেখা গেছে ঘরমুখী মানুষের ঢল। দূরপাল্লার বাস না চললেও মানুষ নানা উপায়ে ঢাকা ছাড়ছেন। অনেকে তল্পিতল্পাসহ হেঁটেই রওনা হচ্ছেন, কেউ কেউ আবার ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলে করে ঢাকা ছাড়ছেন। ঘরমুখো মানুষের ঢলে নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই। সঙ্গে তারা গুনছেন কয়েকগুণ বেশি ভাড়া।

এসআর/আরএইচ