মে মাসের ৬ তারিখ। চাকরির খোঁজে সিরাজগঞ্জে যাওয়া ১৬ বছরের এক তরুণীকে আশ্রয় দেওয়ার কথা বলে ধর্ষণ করে লেগুনা চালকসহ চারজন। ভয়ে মুখ খোলেনি মেয়েটি, মামলাও করেনি, পুলিশকেও জানায়নি। অবশেষে পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংয়ের নির্দেশনায় ধর্ষণের ৬ দিন পর অভিযুক্তদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হয়। 

বুধবার (১২ মে) রাতে সিরাজগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তরা হলেন : মো. লালন ও মো. রাসেল।

পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, শৈশবেই মেয়েটির মা মারা যান। তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করলে ঘরে ঠাঁই হারায় মেয়েটি। এতদিন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় দাদির সঙ্গে থাকতো সে। দাদিকে নিয়ে অনেক কষ্টে চলে তাদের সংসার। এক বান্ধবী তাকে সিরাজগঞ্জের রায়পুরে একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিলে সে ময়মনসিংহ থেকে সিরাজগঞ্জের দিকে রওনা হয়। তবে টাঙ্গাইলের কালিহাতি পর্যন্ত আসতে তার সন্ধ্যা হয়ে যায়। রাতে থাকার জন্য জায়গা খুঁজছিল মেয়েটি। একা দাঁড়িয়ে ছিল টাঙ্গাইল রেল স্টেশনে।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে এক টাকায় ঈদের আনন্দ পেলেন ছিন্নমূল মানুষ

এআইজি সোহেল জানান, এ সময় স্টেশনের পাশে এক লেগুনাচালক এগিয়ে এসে মেয়েটিকে সিরাজগঞ্জ পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। তবে রাস্তায় এই চালকের সঙ্গে যোগ দেয় আরও তিন যুবক। তারা মেয়েটিকে নিয়ে হাতিয়া ও শাল্লার মাঝামাঝি ছোট বটতলা গ্রামের দিকে নিয়ে ধর্ষণ করে। অসুস্থ শরীরে মেয়েটি চলে যাওয়ার সময় তার সঙ্গে স্থানীয় একজনের দেখা হয়। তখন মেয়েটি ভয়ে কাঁপছিল। কারো কাছে সাহায্য চাওয়ারও মানসিকতা ছিল না তার। তার ধারণা, ধর্ষকরা আবারও তাকে খুঁজে বের করবে। তবে স্থানীয় ওই ব্যক্তি (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত বাংলাদেশ পুলিশ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের ইনবক্সে এ তথ্য জানান।

আরও পড়ুন : বাজার করতে টাকা লাগে না সিএমপির মার্কেটে 

পুলিশ সদর দফতর থেকে বার্তাটি ওসি কালিহাতি সওগাতুল আলমকে পাঠিয়ে দ্রুত তদন্ত করে মেয়েটি ও অভিযুক্তদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয় মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। বুধবার রাতে নির্যাতিতার দেওয়া তথ্য মতে, আসামিদের শনাক্ত করে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ সদর দফতর জানায়, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার বাকি দুই আসামি সুমন ও রিপন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। মেয়েটি বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে চিকিৎসাধীন। মেয়েটিকে একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য চেষ্টা করছে পুলিশ।

এআর/এসকেডি