মোট ২০০ জন বৃদ্ধ রিকশাচালক ও প্রতিবন্ধী পুলিশের এ বাজার থেকে ঈদ সামগ্রী পেয়েছেন / ছবি : ঢাকা পোস্ট

নিজেদের বেতন ও বোনাসের টাকা দিয়ে বৃদ্ধ রিকশাচালক ও প্রতিবন্ধীদের কাপড়, সেমাই চিনিসহ ঈদের বাজার করে দিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। হাতে তুলে দিয়েছেন নগদ টাকা। বিদায়বেলায় দিয়েছেন সম্মানসূচক স্যালুটও!

বৃহস্পতিবার (১৩ মে) চট্টগ্রামের রাউজান থানায় 'বিনা পয়সার ঈদ বাজার' নামে অনন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আনোয়ার হোসেন শামীমের উদ্যোগে পরিচালিত এ বাজারে বৃদ্ধ রিকশাচালকসহ স্থানীয় অসহায় ও প্রতিবন্ধী মানুষ ঈদের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই বাজার থেকে এলাকার দুস্থ নারী পুরুষ বিনাপয়সায় শাড়ি, লুঙ্গি, সেমাই, চিনিসহ বিভিন্ন ঈদ সামগ্রী পেয়েছেন। বাচ্চাদের জন্য ছিল রকমারি খেলনা। খরচ করার জন্য বিভিন্ন অংকের নগদ টাকাও দেওয়া হয়েছে সবাইকে।

পুলিশ জানায়, থানা চত্বরের খালি জায়গায় বসেছিল এই বাজার। সেখানে মোট ৪টি কাউন্টারের মাধ্যমে বিনাপয়সায় কেনাকাটা করেন এলাকার দুস্থ মানুষ। কাউন্টার গুলোর নাম ছিল যথাক্রমে কাপড়-চোপড় কাউন্টার, খাদ্যসামগ্রী কাউন্টার, খেলনা কাউন্টার ও ধন্যবাদ কাউন্টার।  এছাড়াও বাজারে প্রবেশমুখে অতিরিক্ত দুটি কাউন্টারে স্যানিটাইজার ও মাস্ক রাখা ছিল। সেগুলো ব্যবহার করেন বাজারে আসা মানুষজন।

এ ব্যাপারে সার্কেল এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, ‘এই অসহায় মানুষ যেন ঈদ আনন্দের ভাগ পান, সেজন্যই আমাদের এই উদ্যোগ। দুস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমাদের লক্ষ্য। প্রায় ২০০ জন মানুষ এ বাজর থেকে ঈদ সামগ্রী নিতে পেরেছেন।’

আরও পড়ুন : বাজার করতে টাকা লাগে না সিএমপির মার্কেটে

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত দুস্থ মানুষ যাতে এ বাজারের সুবিধা পান তা নিশ্চিত করতে আগেই তালিকা তৈরি করেছিল পুলিশ। ঈদের পুরো দিন চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় চলমান থাকবে আমাদের এ উদ্যোগ। আর বিদায়বেলায় তাদের দেওয়া হয়েছে সম্মানসূচক স্যালুটও। এছাড়া বাচ্চাদের জন্য খেলনাও ছিল।’

পুলিশের এই বাজারে এসেছিলেন ডাবুয়া এলাকার বৃদ্ধ রিকশাচালক মো. বদি আলম (৬০), মুন্সী ঘাটা এলাকার প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ মো. জহির (৫৮)। বাজার শেষে বাড়ি ফেরার পথে তারা বলেন, অভাবের সংসার আমাদের। ঈদে কিছু কিনতে পারিনি। এলাকার কয়েকজন গ্রাম পুলিশকে সে কথা জানিয়েছিলাম। শেষে তারাই এই বাজারে আমাদের আসতে বলেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঈদ বাজারের জন্য কারো কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নেওয়া হয়নি। সার্কেল এএসপিসহ রাউজান থানার অন্য সব পুলিশ সদস্যদের বেতন বোনাসের টাকা থেকে এ খরচ করা হয়েছে।

উপস্থিত থেকে পুরো বিষয়টির তদারকি করেছেন এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম। এছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হারুন, সেকেন্ড অফিসার অজয় শীলসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

কেএম/এসকেডি