হাতিরঝিলে মানুষের সমাগম/ ছবি : সুমন শেখ

চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উল ফিতর উদযাপনের আহ্বান জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি মাস্ক পরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের জামাত আদায় করতে বলা হয়েছে। 

ঈদে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় জনসমাগম এড়াতে রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে। তবে বিনোদনপ্রেমী রাজধানীবাসী যেন দুধের স্বাদ ঘোলেই মেটানোর চেষ্টা করছেন। বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকলেও তারা ভিড় জমিয়েছেন হাতিরঝিল, ধানমন্ডি রবীন্দ্র সরোবর, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, রমনা পার্ক ও বেইলি রোডসহ বিভিন্ন স্থানে। পাশাপাশি আড্ডা বসছে ছোট-বড় রেস্তোরাঁয় 

ঈদের দিন (শুক্রবার) সরেজমিনে দেখা যায়, বিকেল থেকেই লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে রাজধানীর রবীন্দ্র সরোবর। সারিবদ্ধ মানুষ প্রবেশ করছে। সামাজিক দূরত্ব না মেনেই গা ঘেঁষে বসেছেন পাশাপাশি। কেউ কেউ কোলাকুলি করে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন বন্ধুর সঙ্গে। অধিকাংশের মুখে মাস্ক থাকলেও অনেককেই দেখা গেছে মাস্ক ছাড়া অসচেতনভাবে ঘুরোঘুরি করছেন। 

রবীন্দ্র সরোবরে মানুষের সমাগম

রবীন্দ্র সরোবরের প্রবেশপথে ভিড় দেখে আনমনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলে উঠলেন, এখানে তো এত মানুষ হওয়ার কথা না। 

রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় দেখা যায় জনসমাগম। হাতিরঝিল প্রকল্প সংলগ্ন এলাকার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই ঘুরতে এসেছেন অনেকেই। আবার কেউ কেউ এসেছেন মুক্ত বাতাস নিতে। 

রাজধানীর হাতিরঝিলে সস্ত্রীক নিয়ে ঘুরতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী সিয়াম। আসেপাশে বাসা বলেই জানালেন তিনি। বলেন, ঘরে থাকতে কেমন যেন দমবন্ধ লাগছিল। তাই একটু মুক্ত বাতাস নিতে বের হয়েছিলাম। এখানে যে পরিমাণ ভিড় তার চেয়ে নিরাপদে সরে পড়াই ভালো। 

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর রমনা পার্ক এলাকায় ভিড় না থাকলেও মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। রমনা পার্কের গেট থেকে মিন্টো রোড হয়ে বেইলি রোডের দুপাশে ফুটপাথে বসে আড্ডা জমিয়েছেন অনেকেই। 

হাতিরঝিলে মানুষের সমাগম/ ছবি : সুমন শেখ 

পুরান ঢাকা থেকে বেইলি রোডে ঘুরতে এসেছেন এক যুগল। একজন আরেকজনকে বলছেন, এখানেও এত মানুষ! বেইলি রোডে কথা হয় মিরপুর থেকে আসা হাবিবের সঙ্গে। একটি বিদেশি কোম্পানির বাংলাদেশ শাখায় কাজ করেন তিনি। তিনি বলেন, ঘরে বসে বসে কাজের গতি হারিয়ে ফেলেছি। তাই ভাবলাম একটু বাইরে বের হলে যদি ভালো লাগে। কিন্তু এখানেও মানুষের ভীড়!

একই অবস্থা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায়। সেখানেও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘুরতে এসেছেন অনেকেই। শহীদ বেদীতে বসেছেন ভিড় করে। মাস্ক পরার বিষয়েও উদাসীনতা তাদের। চকবাজার থেকে আসা ভুবন বলেন, কেল্লায় গেছিলাম। গিয়া দেখি মানুষ আর মানুষ। গেটের সামনে গিয়া দেখি কেল্লা বন্ধ। এইখানে বইবার আইছি। বওনের জায়গায়ও নাই। 

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রেস্তোরাঁগুলোতে আড্ডা জমিয়ে বসেছেন অনেকেই। আবার রেস্তোরাঁর বাইরে অপেক্ষমাণ রয়েছেন অনেকেই ভিড় কমার আশায়।

এইউএ/আরএইচ