রাজধানীর অনেক স্থানেই পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে বদলায়নি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা। এ এলাকার বাসিন্দাদের ভোগান্তির নাম আরেক নাম বৃষ্টি। এখানে মাত্র আধ ঘণ্টার বৃষ্টিতে ডুবে যায় অলি-গলি।

শনিবার (১৫ মে) শেষ বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত বৃষ্টিতে ১৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মনিপুর, পূর্ব মনিপুর, মোল্লাপাড়া, আমতলা, ৬০ ফিট সংলগ্ন পাকা মসজিদ, ছাপরা মসজিদ, মাইকের দোকানের গলি, মধ্য পীরেরবাগ, শিমুলতলার গলিতে জমেছে হাঁটু পানি। কোথাও কোথাও পানি নিষ্কাশন তো হচ্ছেই না, বরং উল্টো ড্রেনের পানি উপচে উঠছে সড়কে। অনেকে বাঁশ-লাঠি দিয়ে সুয়ারেজ লাইনগুলো পরিষ্কারের চেষ্টা করছেন। তবে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। 

পূর্ব মনিপুরের বাসিন্দা আফসার হোসেন বলেন, আমরা আগের কাউন্সিলরকে বলেছি। বর্তমান কাউন্সিলরকেও বলেছি যে, জলাবদ্ধতা সমস্যার নিরসন করুন। বর্ষা মৌসুমের আগে থেকেই বলে আসছি। এখন বৃষ্টি হচ্ছে, পানি জমে যাচ্ছে, বাসা থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না।

মোল্লাপাড়ার মিনহাজ নামে এক মুদি দোকানদার বলেন, খাল দখল হয়ে সুয়ারেজ লাইন বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বৃষ্টি হলেই জমে যাচ্ছে পানি, হচ্ছে জলাবদ্ধতা। বলেও লাভ হচ্ছে না। কর্ণপাত করছেন না কেউই। এ এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যা নিরসনের যেন কেউ নেই।

মাইকের দোকানের গলির বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা বাড়ির মালিক হিসেবে সিটি করপোরেশনকে ট্যাক্স দিই। আশপাশের বহু এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসন হলেও এই এলাকায় হচ্ছে না, বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকছে। পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। সুয়ারেজ লাইন বন্ধ হয়ে রয়েছে। এগুলো সমস্যা দেখার যেন কেউই নেই। 

যোগাযোগ করা হলে ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইসমাইল মোল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, পানি নিষ্কাশনের সবগুলো পথই বলা যায় বন্ধ। আমতলায় লাইনে ব্লক হওয়ার কারণে প্রায় আট বছর ধরে এই এলাকার মানুষের ভোগান্তির নাম বৃষ্টি। 

কাউন্সিলর বলেন, আমি গত নয় মাস ধরে এ বিষয়টি  সিটি করপোরেশনকে জানিয়ে আসছি। কিন্তু কোনোভাবেই কাজের অনুমোদন পাচ্ছি না, যে কারণে বৃষ্টি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভোগান্তিও শুরু হয়ে গেছে। মাত্র ১১/১২ লাখ টাকার কাজ। ধরনা দিয়েও কাজ হাসিল করতে পারছি না। এটা কাউন্সিলর হিসেবে আমার জন্য খুবই দুঃখের। 

কাউন্সিলর বলেন, এ এলাকার খালের বেশির ভাগ অংশ দখলে। তার মধ্যে কিছুদিন আগে ওয়াসা খালের জমি ভরাট করে একটি পাম্প বসিয়েছে। যে কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ আগের চেয়ে বেশি আটকে গেছে। খাল উদ্ধার তো তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব না। এটা প্রক্রিয়ার একটা অংশ। 

তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে যদি জলাবদ্ধতা নিরসন করতে হয়, তাহলে সুয়ারেজ লাইনগুলো ক্লিয়ার করতে হবে। বিশেষ করে আমতলায় যে সুয়ারেজ লাইনটি বন্ধ হয়ে গেছে, সেটি উন্মুক্ত করা জরুরি। এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। আমি কাউন্সিলর হিসেবে তা অনুধাবন করতে পারছি। কিন্তু কিছু করতে পারছি না। এ সমস্যা সম্পর্কে মেয়র ও প্রধান প্রকৌশলী অবগত।

জেইউ/আরএইচ