প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবি করেছে সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড। সোমবার (১৭ মে) দিবাগত রাতে সংগঠনটির সভাপতি মোজাম্মেল বাবু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় সচিবালয়ে আটকে রাখা হয়। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। তাকে সেখানে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয় ও তার মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। 

পরে সেখান থেকে তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করা হয়েছে

এডিটরস গিল্ড একজন সাংবাদিকের সঙ্গে এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানায়। সংগঠনটি মনে করে দেশের স্বনামখ্যাত একজন সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গেলে তাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখা অন্যায়, অনভিপ্রেত। কী কারণে এভাবে আটকে রাখা হয়েছে, অসুস্থ হওয়ার পরও কেন তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলো না তার সুষ্ঠু তদন্ত দরকার। রোজিনাকে হেনস্তার পেছনে কারা দায়ী সেইসব ব্যক্তিদেরও খুঁজে বের করতে হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারের নীতি যেখানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সেখানে আমলাতন্ত্রের ভেতরে বা প্রশাসনের অভ্যন্তরে কারা এসব কাজ করে গণমাধ্যমকে সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছে তারও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

গিল্ড মনে করে, সত্য তুলে ধরা, মিথ্যা উন্মোচন করা, দুর্নীতির চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরাই সাংবাদিকতার কাজ। রোজিনা ইসলাম সেই কাজ করছিলেন। যদি কোথাও কোনও আইনের ব্যত্যয় ঘটে থাকে তবে আইনি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে সুরাহাই কাম্য। কিন্তু শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা, ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখা কোনো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নয়।

এডিটরস গিল্ড ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করছে। অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে তার মুক্তি দাবি করছে।

ওএফ