রোজিনা ইসলাম

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে কাশিমপুর কারাগারে একটি রুমে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। কারা সূত্রে তথ্য জানা গেছে, কারাগারের মেডিকেল বিল্ডিংয়ের একটি কক্ষে তাকে রাখা হয়েছে। তবে সেখানে টেলিভিশন সেট নেই। কয়েকটি মুদ্রিত সংবাদপত্র তাকে দেওয়া হয়েছে। 

জানা গেছে, তার শরীর ভালো আছে। সাধারণ বন্দীদের মতো রোজিনা ইসলামকে ওই কারাগারে রাখা হয়েছে।

রোজিনা ইসলামের স্বামী মনিরুল ইসলাম মিঠু বুধবার (১৯ মে) সকালে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারাগার প্রাঙ্গণে অপেক্ষা করলেও দেখা করতে পারেননি। তিনি ও তার সঙ্গে যাওয়া আরও তিনজন স্বজনদের কাউকেই দেখা করতে দেওয়া হয়নি। 

মনিরুল ইসলাম মিঠু বলেন, মঙ্গলবার বেলা ২টা ৩৫ মিনিট থেকে আমি কারাগার প্রাঙ্গণে ছিলাম। কারা কর্তৃপক্ষ করোনাকালের অজুহাত দিয়ে আমাদের সঙ্গে রোজিনার সাক্ষাৎ করতে দেয়নি। পরে সেখান থেকে বিকেলে রওনা দিয়ে রাত ১১টায় ঢাকায় ফিরি। বৃষ্টির ফলে রাস্তায় পানি জমে গিয়েছিল। ঢাকা ও কাশিমপুরে টানা ২৬ ঘণ্টা আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। নিজের চোখে দেখতে হয়েছে রোজিনার ওপর নিপীড়ন। রোজিনা অনুরোধ করেছে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য। সেটা সম্ভব হয়নি।

মনিরুল ইসলাম মিঠু বলেন, মঙ্গলবার রোজিনাকে যে প্রিজন ভ্যানে কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়েছে তাতে চোর-ডাকাতদের নেওয়া হয়। তীব্র গরমে রোজিনাকে ওই গাড়িতে করে কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

মনিরুল ইসলাম মিঠু জানান, আমি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেছিলাম পুলিশ পাহারায় আমার গাড়িতে করে রোজিনাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এ-ও বলেছিলাম বিশেষ গাড়ির ব্যবস্থা করতে। তারা আমার কোনো অনুরোধ রাখেনি। 

উল্লেখ্য, পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গত সোমবার দুপুরে বাসা থেকে বের হন রোজিনা ইসলাম। তারপর আর বাসায় ফিরতে পারেননি। সেদিন সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে দুপুর থেকে তাকে টানা পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। তাকে সেখান থেকে শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়। 

পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার ১৮ মে দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৮টায় শাহবাগ থানা থেকে রোজিনা ইসলামকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায়। তিন ঘণ্টা ছিলেন তিনি সেখানে। পরে এজলাসে নেওয়া হয়। শুনানি শেষে আবার নেওয়া হয় হাজতখানায়। প্রায় ৩৫ মিনিট পর প্রিজন ভ্যানে তাকে আদালত থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরের কাশিমপুরের মহিলা কারাগারে নেওয়া হয়। কারাগারে তাকে নেওয়া হয় দুপুর আড়াইটার দিকে। সোমবার থেকে তাকে কারাগারে নিতে পার হয় প্রায় ২৩ ঘণ্টা। এই ২৩ ঘণ্টা ভোগান্তির শিকার হতে হন রোজিনা।

পিএসডি/ওএফ