আগামীকালের মধ্যে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং হেনস্তাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল। 

আজ (বুধবার) জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার ও হেনস্তাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ হুঁশিয়ারি দিয়ে মোল্লা জালাল বলেন, তখন যদি সরকার এবং গণমাধ্যমগুলো মুখোমুখি অবস্থান নেয়, তার দায় সম্পূর্ণভাবে সরকারকে নিতে হবে। 

মোল্লা জালাল বলেন, আগামীকাল আমাদের বোন রোজিনা ইসলামকে নিঃশর্ত মুক্তির মাধ্যমে ফেরত নিয়ে আসবো। আমি আপনাদের বলতে চাই, আগামীকাল আমাদের বোন ফেরত এলে ফুল দিয়ে বরণ করে নেব আমাদের আন্দোলনের সাফল্য হিসেবে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে রোজিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। রোজিনাকে যে হেনস্তা করা হয়েছে তা বিশ্ববাসী দেখেছে। এর জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। যদি এই তিনটি দাবি কালকের মধ্যে মেনে নেওয়া না হয় তাহলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, গণমাধ্যম মালিকদের সংগঠন, জাতীয় প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি এবং সাংবাদিকদের সকল সংগঠনসহ আমরা সম্মিলিতভাবে পরামর্শ করে কঠিনতম কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো। আর তখন যদি সরকার এবং গণমাধ্যমগুলো মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে নেয় তার দায় সম্পূর্ণভাবে সরকারকে নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সুপরিকল্পিতভাবে রোজিনার ওপর হামলাটি করা হয়েছে। আজকের এই কর্মসূচি দেখে সরকারের নিশ্চয়ই উচ্চ মহলে নাড়া লেগেছে। বুঝতে পেরেছে, সাংবাদিকদের ভয় দেখিয়ে, রুমে আটকে রেখে স্তব্ধ করা যাবে না। বরং আজকে কতিপয় দুর্নীতিগ্রস্ত আমলার কারণে সরকারের ক্ষতি হচ্ছে, রাষ্ট্রের ক্ষতি হচ্ছে। এগুলো সরকারি উচ্চমহল বিবেচনা করে আগামীকালের মধ্যে আমাদের বোনকে মুক্তি দেবে।

বিএফইউজের সহ-সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, রোজিনার ওপর যে হাত পড়েছে সেটা দুর্নীতিবাজ আমলাতন্ত্রের কালো হাত। রোজিনা ইসলামের গলায় নয়, এদেশের জনগণের গলায় তারা হাত দিয়েছে। রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে ৬ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা আজকে নির্যাতন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। আমি তার ওপর এই হামলা দেখি আমলাতান্ত্রিক নিপীড়ন হিসেবে, হেফাজতে নির্যাতন হিসেবে। সুতরাং যারা এই কাজ করেছে তাদের বিচার করতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মজিদ, সদস্য শেখ মামুনুর রশীদ ও সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক কাজল হাজরা, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি শারমীন রিনভী, এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (এটিজেএফবি) সভাপতি নাদিরা কিরণ, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুনিমা সুলতানা, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নাসিমা আক্তার, বিএসআরএফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, বরিশাল ডিভিশনাল জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিন আল রশিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব সৈকতসহ অনেক সাংবাদিকনেতা।

এমএইচএন/এনএফ