গুলশানে সিসা বারে অভিযান
ওমর সানি-মৌসুমীর ছেলের নাম বাদ রেখে মামলা
রাজধানীর গুলশান-২ এলাকায় তারকা দম্পতি ওমর সানি ও মৌসুমীর ছেলে ফারদিন এহসান স্বাধীনের মালিকানাধীন মনটানা লাউঞ্জ নামে সিসা বারে অভিযানের ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে গুলশান থানায় করা এই মামলায় সিসা বারটির মালিক ফারদিন এহসান স্বাধীনকে আসামি করা হয়নি।
শুধু ঘটনাস্থল থেকে আটক ১১ জনের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বুধবার (১৯ মে) গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসান ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
আবুল হাসান বলেন, সিসা বারে অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে যে ১১ জনকে আটক করেছি তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। মামলায় শুধু তাদেরকেই আসামি করা হয়েছে। আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সিসা বারের মালিক অভিনেতা দম্পতি ওমর সানি ও আরিফা জামান মৌসুমীর ছেলে ফারদিন এহসান স্বাধীনকে কেন মামলায় আসামি করা হয়নি এই প্রশ্নের গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে তো তাই অভিযানে যাদের আটক করা হয়েছে তাদের আসামি করা হয়েছে। সিসা বারের মালিককে আসামি করা হবে কি-না তা তদন্তের বিষয়। তদন্ত করে মালিকের নামে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকেও আসামি করা হবে। তাকে যেহেতু আমরা ঘটনাস্থলে পাইনি তাই তাকে আপাতত মামলায় আসামি করা হয়নি। যাদের ঘটনাস্থলে পাওয়া গেছে তাদেরকেই আসামি করা হয়েছে মামলায়।
বিজ্ঞাপন
সিসা বারে পুলিশের অভিযানের পর সিসা বার অবৈধ কেন ছেলের হয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকা পোস্টের কাছে প্রশ্ন রাখেন ওমর সানি। তিনি বলেন, সিসা সিগারেটের চেয়েও কম ক্ষতিকর। এছাড়া গুলশান-বনানীতে আরও ৪০টি সিসা বার রয়েছে। তাহলে সিসা বার কেন অবৈধ।
ওমর সানি বলেন, মনটানা লাউঞ্জটি আসলে একটি খাবারের রেস্টুরেন্ট। এটির মালিক আমার ছেলে ও তার দুই বন্ধু। খাবারের পাশাপাশি এখানে সিসা খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। আমরা কোনো বে-আইনি কাজ করিনি। আমরা দেশের সেলেব্রিটি, আমরা দেশের আইন অনুযায়ী চলতে চাই। আমরা খুব সুন্দরভাবেই আছি এবং বাকি জীবনটাও খুব সুন্দরভাবে থাকব। অবৈধ কোনো কিছু করিনি আর করবও না।
তার ছেলের সিসা বারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অভিনেতা ওমর সানি বলেন, গুলশান বনানীতে প্রায় ৪০টির মতো সিসা লাউঞ্জ আছে। আমরা জানা মতে, সিসা সিগারেটের থেকে কম ক্ষতিকর। তাহলে সিগারেট অবৈধ না হলে সিসা কেন অবৈধ? তারপরেও সরকার যদি গুলশান-বনানীসহ দেশের সব সিসা লাউঞ্জ বন্ধ করে দেয় তাহলে আমাদেরটাও বন্ধ করতে আপত্তি নেই। এখানের আমাদের আসল ব্যবসা কিন্তু খাবারের। সাপ্লিমেন্টারি হিসেবে পাশে সিসা বার ছিল।
তিনি বলেন, গুলশান-বনানীতে যদি আরও ১০টা সিসা লাউঞ্জ থাকে তাহলে আমারটা কেন থাকবে না। আরও ১০-১৫ বছর আগে থেকেই গুলশান-বনানীতে সিসা লাউঞ্জ আছে।
তার ছেলের সিসা বারের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অনুমোদন আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিসা লাউঞ্জের শত ভাগ কোনো কাগজপত্র সরকার দেয় না। আর সিগারেট অবৈধ না হলে সিসা লাউঞ্জ কেন অবৈধ হবে?
সিসা বার অবৈধ না হলে পুলিশ কেন অভিযান চালিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ঢাকার বাইরে ছিলাম। এখন পুলিশের সঙ্গে আমাদের অফিসিয়ালি কথা হবে। লকডাউনের কারণে দেশের সব রেস্টুরেন্ট বন্ধ ছিল। এটা খোলা ছিল। ওই কারণেও পুলিশ অভিযান চালাতে পারে। আমার জানা মতে, পুলিশ ৫ জনকে আটক করেছে। তারা প্রত্যেকেই আমাদের স্টাফ। তারা তো নিরীহ মানুষ।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মনটানা সিসা লাউঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে গুলশান থানা পুলিশ। অভিযান শেষে গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি গুলশান-১ ও ২ এর মাঝখানে আরএম সেন্টার নামে একটি ভবনে মন্টানা লাউঞ্জ নামে একটি সিসা বার তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। সিসা বারটি গুলশান-২ এলাকায় পড়েছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে আমরা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই বারে অভিযান পরিচালনা করি। ঘটনাস্থল থেকে আমরা ১১ জনকে আটক করি। এছাড়া অভিযানে সিসা ও সিসা সেবন করার বিভিন্ন জিনিসপত্রও জব্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সিসা সেবন নিষিদ্ধ। তাই এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা রুজু বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এমএসি/ওএফ