ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় সারুলিয়া স্থায়ী পশুর হাট ছাড়া আরও ২৩টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। সব মিলিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এবার ২৫টি কোরবানির পশুর হাট বসবে। তবে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সংখ্যা আরও কমতে পারে।

জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটির সারুলিয়া পশুর হাটের পাশাপাশি আরও ১৩টি স্থানে এবং ঢাকা উত্তর সিটির গাবতলী পশুর হাটের পাশাপাশি আরও ১০টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসবে।

প্রতিবছর ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির হাট কেন্দ্রিক এক ধরনের উৎসবের আমেজ বিরাজ করত রাজধানীবাসীর মধ্যে। তবে গতবার এবং এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে এবারও পশুর হাট বসছে। যেখানে বিরাজ করছে ভিন্ন এক পরিস্থিতি, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যের চলছে হাটের প্রস্তুতি। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে হাট বসানো ও পরিচালনা করা ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের জন্য এবারও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্থায়ী একটি হাটের পাশাপাশি আরও ১৩টি হাটের স্থান আমরা নির্ধারণ করেছি। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের কমিটি যদি মনে করে এর সংখ্যা কমানো প্রয়োজন, তাহলে নির্ধারিত হাটগুলো কমেও যেতে পারে। তবে প্রাথমিকভাবে সারুলিয়া পশুর হাটসহ আমরা ১৪টি হাট নির্ধারণ করেছি।

ডিএসসিসি সূত্র জানা গেছে, সারুলিয়া পশুর হাট ছাড়া আরও যে ১৩টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসবে এর মধ্যে রয়েছে- মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, গোপীবাগ বালুর মাঠসহ কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ মাঠসংলগ্ন খালি জায়গা, ধূপখোলা ইস্টঅ্যান্ড ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত জায়গা, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজার মৈত্রী সংঘের ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, হাজারীবাগ এলাকায় ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি মাঠসংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, আফতাবনগর (ইস্টার্ন হাউজিং) ব্লক-ই, এফ, জি, এইচ সেকশন ১ ও ২ এর খালি জায়গা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা, লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, শ্যামপুর-কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন খালি জায়গা, গোলাপবাগে সিটি করপোরেশন মার্কেটের পেছনের খালি জায়গায় এবং পোস্তগোলা শ্মশানঘাটসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা।

অন্যদিকে ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট ছাড়া আমরা আরও ১০টি অস্থায়ী হাট বসানোর জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। ফাইনালি সব তথ্য জানা যাবে জুনের ১০ তারিখের পর। তবে প্রাথমিকভাবে গাবতলীসহ অস্থায়ী ১০টি মিলিয়ে মোট ১১টি হাটের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। হাটের জন্য আরও আবেদন আসছে, তাই এ সংখ্যা বাড়তে পারে। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে হাটের সংখ্যা কমেও যেতে পারে।

ডিএনসিসি সূত্রে জানা গেছে, গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট ছাড়া আরও যে ১০টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসবে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং ব্লক-ই সেকশন ৩ এর খালি জায়গা, উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমের অংশ, ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমে গোলচত্বর পর্যন্ত সড়কের ফাঁকা জায়গা, মিরপুর সেকশন ৬ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের খেলার মাঠ, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় অবস্থিত বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা, ভাটারা (সাইদনগর) পশুর হাট, কাওলা শিয়ালডাঙ্গাসংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল ব্রিজ সংলগ্ন মস্তুল ডুমনী বাজারমুখী রাস্তার উভয় পাশের খালি জায়গা এবং উত্তরখান মৈনারটেক শহীদনগর হাউজিং প্রকল্পের খালি জায়গা।

করোনা মহামারির মধ্যে গতবছর দুই সিটি করপোরেশন রাজধানীতে অস্থায়ী ২৪টি হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এর মধ্যে উত্তর সিটি এলাকায় ১০টি এবং দক্ষিণ সিটি এলাকায় ১৪টি হাট বসানোর সিদ্ধান্ত ছিল। পরে করোনা সংক্রমণ বিবেচনায় উত্তর সিটিতে ১০টির পরিবর্তে ছয়টি এবং দক্ষিণে ১৪টির পরিবর্তে ১১টি হাট বসানো হয়।

এএসএস/এসএসএইচ