ডাকবাক্সের আদলে নির্মাণ করা ডাক ভবন

প্রতিনিয়তই বদলে যাচ্ছে আগারগাঁওয়ের চিত্র। সরকারি সব গুরুত্বপূর্ণ অফিস থাকায় শুধু ভবনই নয়, বদলে যাচ্ছে রাস্তাঘাটের দৃশ্যও। নানারকমের ফুলের গাছ লাগিয়ে বাড়ানো হচ্ছে সৌন্দর্য। বর্তমানে আগারগাঁওয়ে সরকারি অফিসের মধ্যে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন ভবনটি ডাক অধিদফতরের। ১৪তলা এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে ডাকবাক্সের আদলে। ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালে জুলাইয়ে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানায়, ডাক অধিদফতরের নবনির্মিত সদর দফতর ডাক ভবনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা আজ (বৃহস্পতিবার) শুরু হচ্ছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ডাকবাক্সের আদলে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নান্দনিক এই ভবনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন। অন্যদিকে আগারগাঁওয়ের ডাক ভবনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন এবং ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিনসহ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও এর অধীন দফতর ও সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানে যুক্ত হবেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শেফায়েত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পৌনে এক একর জায়গার ওপর ৯১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০ মার্চ ২০১৮ সালে একনেক সভায় ডাক ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। ডাক বিভাগের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহারের জন্য ভবনটি তৈরি করা হয়েছে। নবনির্মিত ডাক ভবনটিতে সুসজ্জিত ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, আধুনিক পোস্টাল মিউজিয়াম, সুপরিসর অডিটরিয়াম, ক্যাফেটেরিয়া, ডে-কেয়ার সেন্টার, মেডিকেল সুবিধা, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং সার্বক্ষণিক ওয়াইফাইসহ অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তিগত সুবিধা রাখা হয়েছে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের ৩০ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় নির্দেশনা দিয়ে বলেছিলেন, ডাক বিভাগের সদর দফতর আগারগাঁও চলে গেলে গুলিস্তানে খালি জায়গাটিকে সবুজময় করা হবে। যাতে পল্টন, মতিঝিলসহ ওই এলাকার মানুষ সেখানে হাঁটতে পারে।

এ প্রসঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তৎকালীন ঢাকা জিপিও ভবনের কয়েকটি কক্ষ নিয়ে ডাক অধিদফতরের যাত্রা শুরু হয়। তীব্র স্থান সংকটের মধ্যে স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকার গুলিস্তানে অবস্থিত ঢাকা জিপিও ভবনের তৃতীয় তলায় ডাক অধিদফতরের প্রশাসনিক সদর দফতরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ঢাকা জিপিও প্রায় ৬০ বছরের পুরনো হয়ে যাওয়ায় ভবনটির ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ সম্ভব নয়। ফলে স্থান সংকুলান না হওয়ায় দাফতরিক কর্মপরিবেশ ও গতিশীলতা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছিল। এ অবস্থায় ডাক অধিদফতরের সদর দফতর হিসেবে একটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ও নান্দনিক স্বতন্ত্র ডাক ভবন স্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছিল।

মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ডাক ভবন উদ্বোধনের ডাক অধিদফতরের জন্য ঐতিহাসিক এই ক্ষণটি স্মরণীয় করে রাখতে একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করবেন।

এসআর/এসএসএইচ