ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা কোভিশিল্ডের দ্বিগুণ দাম দিয়ে চীন থেকে টিকা কিনছে বাংলাদেশ। সেরামের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রতি ডোজ কেনা হয়েছে ৫ ডলার দিয়ে। চীনের সিনোফার্মের টিকা কিনতে দিতে হচ্ছে ডোজপ্রতি ১০ ডলার। 

তবে দ্বিগুণ দাম ধরলেও আগামী তিন মাসের মধ্যেই চীনের ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যালস বা সিনোফার্ম বাংলাদেশকে দেড় কোটি টিকা দেবে। সেরামের কাছ থেকে ৩ কোটি পাওয়ার কথা থাকলেও এখন অবধি পাওয়া গেছে মাত্র ৭০ লাখ টিকা।

বৃহস্পতিবার (২৭ মে) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে চীন থেকে টিকা কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত সচিব শাহিদা আক্তার এসব তথ্য জানান।

শাহিদা আক্তার বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য সংরক্ষণ ও করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকাদান অব্যাহত রাখতে চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম থেকে গণচীনের তৈরি সার্স কোভ-২ ভ্যাকসিন কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, দেড় কোটি ডোজ টিকার মোট দাম পড়বে ১৫ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ২৬৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এই হিসেবে প্রতি ডোজের দাম পড়বে ১০ ডলার বা ৮৪৮ টাকা।

শাহিদা আক্তার জানান, সিনোফার্ম প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে জুন, জুলাই ও অগাস্ট মাসে বাংলাদেশকে দেড় কোটি টিকা সরবরাহ করবে। কেনাকাটায় আমাদের দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। সরাসরি চীন সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের এই ক্রয় চুক্তি হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কোভিশিল্ড টিকা এনে এতদিন দেশে টিকাদান চলছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সব খরচ মিলিয়ে ভারত থেকে কেনা প্রতিটি টিকার দাম ছিল ৫ ডলার। আর চীন থেকে কিনতে খরচ হচ্ছে ১০ ডলার।

গত ১২ মে সিনোফার্মের টিকার পাঁচ লাখ ডোজ বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়, যা চীন সরকার উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে। আরও ছয় লাখ ডোজ টিকা চীন উপহার হিসেবে দেবে বলে জানিয়েছে। কোভিশিল্ডের মতো এ টিকাও নিতে হবে দুই ডোজ করে।

এদিকে, চুক্তি অনুযায়ী গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে মোট তিন কোটি টিকা বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা সেরামের। এর ভিত্তিতেই বাংলাদেশ গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশজুড়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে। কিন্তু সেরাম এ পর্যন্ত মাত্র ৭০ লাখ ডোজ সরবরাহ করেছে। ফলে বাংলাদেশে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়ে সংকট তৈরি হয়।

এ পর্যন্ত দেশে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ২০ হাজার ১৫ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪১ লাখ ২১ হাজার ৩১৭ জন। 

এসআর/এফআর/জেএস