বেলা ১১টার দিকে শাশুড়ি ফোন করে জানান, স্ত্রী চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমান লিপি মারা গেছেন। এরপরই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্বামী সামসুদ্দিন আজাদ। 

ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘শাশুড়ি ফোন করে কাঁদতে কাঁদতে আমাকে বলেন, লিপি হয়তো বেঁচে নেই, তুমি একটু ঘটনাস্থলে যাও। এরপর বাসায় ছুটে আসি। তবে প্রথমে পুলিশ আমাকে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। দুপুর আড়াইটার দিকে ঘরে প্রবেশ করে বিছানার ওপর স্ত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাই।’

তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে নিঃসন্দেহে হত্যা করা হয়েছে। হয়তো খুনিরা হত্যার মোটিভ ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য আগুন লাগিয়ে থাকতে পারে। এখানে ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। তাদের ওপর আশ্বাস রাখতে চাই। আমি মনে করি, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক তদন্ত ও দোষীদের বিচার হবে।’

স্ত্রীর সঙ্গে না থেকে কেন তিনি আলাদা বাসায় থাকতেন- জানতে চাইলে সামসুদ্দিন আজাদ বলেন, ‘তার ১১ বছরের মেয়ে কলাবাগানের একটি স্কুলে পড়াশোনা করে। আমার বৃদ্ধা শাশুড়িকে দেখভালের সুবিধার্থে লিপি কলাবাগানের ওই বাসায় থাকতেন।’

দীর্ঘদিনের প্রতিবেশী বিউটি আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘লিপি নিঃসন্দেহে ভালো মানুষ। তার সঙ্গে কারও যে শত্রুতা থাকতে পারে এটা বিশ্বাস করি না। ’

সাবিরার মামাতো ভাই মো. রেজাউল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমাদের মনে হচ্ছে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। বিষয়টিকে অন্যদিকে ডাইভার্ট করার জন্য আগুনের ঘটনা সাজানো হয়েছে। আমরা এখনো কাউকে সন্দেহ করছি না। তদন্তের পর পুলিশ বিস্তারিত বলতে পারবে।’

সোমবার (৩১ মে) সকালে কলাবাগানের ৫০/১ ফার্স্ট লেনের বাসার তিনতলা থেকে কাজী সাবিরা রহমান লিপির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি গ্রিন লাইফ হাসপাতালের কনসালটেন্ট (সনোলজিস্ট) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কলাবাগান থানার ওসি পরিতোষ চন্দ্র ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ওই বাড়িতে পৌঁছে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ও মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তারা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে ডিবি হেফাজতে (আটক নয়) নেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- নিহত সাবিরার বাসায় সাবলেট থাকা এক তরুণী, সেই তরুণীর বন্ধু, বাসার দারোয়ান রমজান ও গৃহপরিচারিকা।

জেইউ/আরএইচ