প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। এখানে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হলো।

প্রথম আলো

সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে হাসনাত ও সারজিসের ফেসবুক পোস্টে দলে অস্বস্তি-অসন্তোষ

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে ফেসবুকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের ভিন্ন ভিন্ন পোস্ট নিয়ে দলটির ভেতরে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। তাঁদের পোস্টকে দলটির নেতাদের অনেকে ‘ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা অর্জনের রাজনীতি’ বলছেন। দলীয় ফোরামে আলোচনা ছাড়াই নেতাদের হুটহাট ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া নিয়ে এনসিপির ভেতরে চলছে নানা আলোচনা। নিজেদের মধ্যে আলোচনায় নেতাদের কেউ কেউ এমন প্রশ্নও তুলছেন যে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে এনসিপি হাস্যরসের বস্তু হয়ে উঠছে কি না।

সমকাল

বিদ্রোহী নাকি পরিশোধিত আলীগ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা, তা নিয়ে রাজনীতির অন্দরমহলে চলছে টানাপোড়েন। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে আওয়ামী লীগ নিয়ে দুটি বিকল্প ভাবনার কথা জানা গেছে। একটি পক্ষ চায়, শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সবাইকে বাদ দিয়ে ‘রেভেল’ তথা বিদ্রোহী আওয়ামী লীগ গঠন করানো। আরেকটি বিকল্প হলো, শেখ হাসিনার সম্মতিতে তাঁর পরিবর্তে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের নেতৃত্বে ‘রিফাইন্ড’ তথা পরিশোধিত আওয়ামী লীগকে ভোটে রাখা।

রাজনৈতিক সূত্রগুলো সমকালকে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সরকারকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরামর্শ দিয়েছে। এ চাওয়া পূরণে ‘শেখ হাসিনাবিরোধী নেতাদের আওয়ামী লীগ’কে নির্বাচনে সুযোগ দেওয়া যায় কিনা– এ ভাবনা রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের একাংশের মধ্যে। তবে এ সুযোগ পেতে ‘হাসিনাবিরোধী’ নেতাদের জুলাই গণহত্যা, তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন, গুম-খুন, ব্যাংক লুট, টাকা পাচারের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এই প্রক্রিয়াকে ‘রিকনসিলিয়েশন’ বলতে চাচ্ছেন কেউ কেউ। একজন উপদেষ্টাসহ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের কয়েকজনের এতে সায় ছিল। গত ২০ ফেব্রুয়ারি সমকালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। 

আজকের পত্রিকা

দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ

যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জনগণ দুর্নীতিবাজ বলে ধারণা করেন, গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সব সচিব এবং সরকারি দপ্তরের মহাপরিচালক, নির্বাহী পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান এবং বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের গত ২০ মার্চ এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দিয়েছে।

বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, যুগ্ম সচিব ও ওপরের স্তরের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দিতে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে গত ৮ জানুয়ারি জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি গঠন করে সরকার।

বণিক বার্তা

দেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর প্রবৃদ্ধির গড় হার ১.৫%, কর্মসংস্থানে ০.২ শতাংশ

যেকোনো দেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী হিসেবে ধরা হয় ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সীদের। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা যেভাবে বেড়েছে, নতুন কর্মসংস্থান বেড়েছে তার তুলনায় একেবারেই সামান্য। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাংকের এক পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, ২০১৩ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এক দশকে দেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী বেড়েছে গড়ে দেড় শতাংশ হারে। যদিও একই সময়ে কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধি হয়েছে দশমিক ২ শতাংশ।

সমকাল

দুর্নীতি-অনিয়মেও শাস্তির নজির নেই

অসত্য তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তি ঠেকানোর পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না সরকার। বরং অসৎ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর তৎপরতায় অমুক্তিযোদ্ধাদের দৌরাত্ম্য বাড়ছেই। 

গত ১৪ বছরে প্রায় ছয় হাজার ব্যক্তি জালিয়াতি, প্রতারণা ও অসত্য তথ্য দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাবেক সচিবসহ প্রায় চারশ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। অনিয়ম শনাক্ত হওয়ার পর তাদের গেজেট বাতিল হলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এমনকি তাদের থেকে ‘মুক্তিযোদ্ধা ভাতা’ বাবদ নেওয়া টাকা ফেরত নিতেও হয়নি কোনো উদ্যোগ। 

কালবেলা

গোপন সম্পদের রাজা মোখলেস

রাজধানীর গুলশানে ৩৩ কাঠার ওপর ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটসহ দুটি বাড়ি, বনানীতে ফ্ল্যাট এবং তেজগাঁও শিল্প এলাকায় দুটি বাণিজ্যিক ফ্লোরের মালিক। ঢাকার গুলশান, মিরপুর, তেজগাঁওসহ সারা দেশে রয়েছে তিন শতাধিক বিঘা জমি। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে শতকোটি টাকার বেশি ডিপোজিটসহ নামে বেনামে রয়েছে অঢেল সম্পদ। ছয়টি কোম্পানির সমন্বয়ে গঠিত একটি গ্রুপ অব কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। সারা দেশে এই বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের (এসবিএসি) বর্তমান চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমান। অথচ কর ফাঁকি দিতে সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন তিনি। আয়কর নথিতে সম্পত্তির পরিমাণ দেখিয়েছেন মাত্র ২১ কোটি টাকা। শুধু তিনিই নন, অঢেল সম্পদের মালিক তার স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েও। তাদের আয়কর নথিতেও রয়েছে অসামঞ্জস্য। সাউথ বাংলা ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কর ফাঁকির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কালবেলার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভয়াবহ তথ্য। শুধু সম্পদের তথ্য গোপন নয়, সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নিজের আয়কে বৈধ করতে নিয়েছেন নানা ধরনের জালিয়াতির আশ্রয়।

কালের কণ্ঠ

রাষ্ট্রের নাম বদলে আপত্তি বিএনপির বেশির ভাগ প্রস্তাবে একমত এনসিপি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে ১৯৭১ ও ২০২৪ সালকে এক কাতারে আনা এবং রাষ্ট্রের সাংবিধানিক নাম পরিবর্তন করার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে কমিশনের বেশ কয়েকটি প্রস্তাবে একমতের পাশাপাশি কিছু দ্বিমত ও বেশ কিছু নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১১৩টিতে পুরোপুরি একমত পোষণ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে কিছু প্রস্তাবে দ্বিমতও করেছে দলটি।

যুগান্তর

জীবিত একজনকে পুড়িয়ে হত্যা করে পুলিশ

গণ-অভ্যুত্থানের বিজয়ের দিন ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় আন্দোলনকারীদের গুলি করে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছিল গোটা দেশ। এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা জানতে পারে, ৬ জনের মরদেহ যখন পোড়ানো হচ্ছিল, তখনো একজন আন্দোলনকারী জীবিত ছিলেন। জ্যান্ত দেখেও তার চিকিৎসা না করে জ্বলন্ত আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে পুলিশ। এরকম লোমহর্ষক তথ্য উঠে এসেছে গণহত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে। এরই মধ্যে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আশুলিয়ায় হত্যার পর ৬ লাশ পোড়ানোর মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। রোববার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের গণহত্যা মামলায় আশুলিয়ায় হত্যার পর ৬ লাশ পোড়ানোর ঘটনার মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। এটিই প্রথম কোনো মামলা, যার তদন্ত সম্পন্ন হলো।

প্রথম আলো

চিকিৎসকদের জন্য বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিসেস প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করবে সংস্কার কমিশন

চিকিৎসকদের জন্য আলাদা স্বাস্থ্য ক্যাডার প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করবে স্বাস্থ্য খাতবিষয়ক সংস্কার কমিশন, যার নাম হবে ‘বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিসেস’।

কমিশনের প্রতিবেদনে কিছু রোগনির্ণয় পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া, ওষুধের দাম সাশ্রয়ী রাখা, চিকিৎসক ও ওষুধ কোম্পানির সম্পর্কের বিষয়ে নীতিমালা করা, বেসরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা এবং সেখানে দরিদ্রদের চিকিৎসার সুযোগ রাখাসহ নানা বিষয়ে সুপারিশ থাকবে।

স্বাস্থ্য খাতবিষয়ক সংস্কার কমিশনের জ্যেষ্ঠ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদনের এসব বিষয় সম্পর্কে জানা গেছে। কমিশন তাদের প্রতিবেদন পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির আগেই জমা দিতে পারে।

সমকাল

যক্ষ্মার নতুন ঝুঁকিতে দেশ

যক্ষ্মা নির্মূলে গত দুই দশক ধরে অন্যান্য দাতা সংস্থার মতো বাংলাদেশকে আর্থিক সহায়তা করেছে মার্কিন সহায়তা সংস্থা ইউএসএইড। গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বন্ধ হয়ে গেছে ইউএসএইডের অর্থায়ন। ফলে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়, প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় প্রভাব পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে বেসরকারিভাবে পরিচালিত রোগ শনাক্তকরণ, গবেষণা ও সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড। হাসপাতালে মিলছে না ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার সেবা। এতে যক্ষ্মার নতুন ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে এখনও শনাক্তের বাইরে ১৭ শতাংশ যক্ষ্মা রোগী। এ রোগীরা অজান্তেই যক্ষ্মার জীবাণু দ্রুত ছড়াতে সহায়তা করবে এবং যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বন্ধের কারণে নতুন রোগী শনাক্ত কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এতে যক্ষ্মা নিয়ে নতুন করে সংকটে পড়তে পারে দেশ। এ জন্য এখনই স্থগিত কার্যক্রম সচল করতে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। অন্য উৎস থেকে সহায়তা পেতে  নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করতে হবে।

কালের কণ্ঠ

চিকিৎসার বাইরে ১৭% রোগী

দেশে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে দুই দশক ধরে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা কাজ করলেও সম্প্রতি তারা তাদের সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির গবেষণা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের একার পক্ষে যক্ষ্মা মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। কারণ জনসচেতনতা ছাড়া কোনো রোগ নির্মূল করা সম্ভব নয়।

একই সঙ্গে গবেষণা না হলে রোগের গতিবিধি জানাও সম্ভব নয়। এতে যক্ষ্মার নতুন ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীনে ২০২৪ সালে বাংলাদেশে তিন লাখ ১৩ হাজার ৬২৪ জন যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসার আওতায় আছে ৮৩ শতাংশ, বাকি প্রায় ১৭ শতাংশ রোগী চিকিৎসার বাইরে।

এছাড়া সেনাপ্রধানের আশ্বাস / সেনাবাহিনী জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের পাশে থাকবে; হাসনাতের স্ট্যাটাস ঘিরে এনসিপিতে ‘অনৈক্য’; জয়শঙ্কর / হাসিনাবিরোধী আন্দোলনের বিষয়ে ভারত অবগত ছিল—সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।