জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কার্বন নিঃসরণের হার খুবই কম থাকা সত্ত্বেও বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে ঢাকা।

বুধবার (২ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও ঢাকা সফররত কপ-২৬ প্রেসিডেন্ট অলোক শর্মার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় এবং জলবায়ু ইস্যুতে ঢাকা-যুক্তরাজ্যের মধ্যে রাউন্ড টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই পৃথিবীকে আমাদের বাঁচাতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। আমরা অবশ্যই এই পৃথিবীকে বাঁচাব। আমরা বলি যে মানুষ এবং পৃথিবীকে বাঁচাতে হবে, আর এটা করার জন্য আমরা সামর্থ্য রাখি। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমরা বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমিয়ে ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে নিয়ে আসব। এটা নিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে একসঙ্গে কাজ করতে চাই, আমাদের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চাই।’

কপ-২৬ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমরা একসঙ্গে কাজ করব। আমরা উভয়পক্ষ একমত হয়েছি যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমিয়ে ১.৫ ডিগ্রি আনার লক্ষ্যে কাজ করব। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী বিশ্ব নেতারা কথা দিয়েছেন বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে আনা হবে।’

চলতি বছরের নভেম্বরে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জাতিসংঘ আয়োজিত জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সম্মেলনকে (কপ–২৬) সামনে রেখে বুধবার সকালে ঢাকায় আসেন অলোক শর্মা। সফরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রী কপ -২৬ প্রেসিডেন্টের কাছে আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর স্বার্থ ও অগ্রাধিকারের বিষয়টি যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক ফোরামে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হবে।

বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি চায় জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি চাই। সেক্ষেত্রে আমরা যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চাই। কেপাসিটি বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা তাদের সাহায্য চাই। আর আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। আমাদের কার্বন নিঃসরণের হার খুবই কম। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি শতকরা ৪০ ভাগ করতে চাই। আমাদের যে কয়লা-ভিত্তিক জ্বালানি সেটা আমরা কমিয়ে আনব।’

এ সময় ড. মোমেন জানান, নভেম্বরের কপ-২৬ সম্মেলনে ৪৮টি দেশের হয়ে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) প্রধান হিসেবে একটি সাইড ইভেন্ট করবে বাংলাদেশ। সেটিতে থাকার সম্মতি দিয়েছেন কপ-২৬ প্রেসিডেন্ট।

বৈঠক প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ‘আমাদের সমুদ্রে যে বাঁধ আছে বিভিন্ন জায়গায় এটা ভেঙে যায়। এগুলো ষাটের দশকে তৈরি করা হয়েছিল, আমরা এটাকে আরও উঁচু করব; এগুলো প্রশস্ত করব। আমরা সেখানে গাছ লাগাবো, ওসেনিক রোড করব; তাহলে ভাঙন হবে। এতে আমাদের জনগণের দুর্ভোগ হবে না, চিংড়ির ঘের নষ্ট হবে না; এক্ষেত্রে আমরা ব্রিটেনের বেসরকারি সেক্টরেও সহযোগিতা চেয়েছি।’

এনআই/এসএম