মশিউর রহমান খান ওরফে বাবু (৪২)। নিজেকে আবরার গ্রুপের বায়ার পরিচয় দিয়ে বড় বড় ব্যবসায়ীদের কাছে বিপুল পরিমাণ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অর্ডার দিতেন। চুক্তি অনুযায়ী পরিশোধ করতেন পণ্যের দামের ১০ থেকে ৩০ শতাংশ টাকাও। পণ্যের সম্পূর্ণ চালান পেলেই অফিস বন্ধ করে উধাও হয়ে যেতেন। এভাবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মশিউর হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ৫০ কোটি টাকার পণ্য।

মশিউরের এই প্রতারণার ফাঁদে পায় দিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন দেশের বিভিন্ন এলাকার অনেক ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন থানায় তার নামে রয়েছে ৯২টির ওপরে মামলা। এসব মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর মহাখালী এলাকা থেকে মঙ্গলবার (১ জুন) মশিউর রহমান খান ওরফে বাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বুধবার (২ জুন) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগস্থ সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শেখ ওমর ফারুক এসব কথা জানান।

শেখ ওমর ফারুক বলেন, মশিউর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে বড় বড় অংকের বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করার প্রলোভন দিয়ে নাম মাত্র দাম পরিশোধ করে অধিক পরিমাণ পণ্য নিয়ে আসতো। পরবর্তীতে চেক প্রদান করলেও পাওনাদাররা চেকের টাকা বা অবশিষ্ট পাওনা টাকা আর তুলতে না পেরে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়তেন।

তিনি বলেন, প্রতারণার কৌশল হিসেবে মশিউর বিভিন্ন স্থানে অফিস সাজিয়ে নিজেকে আবরার গ্রুপের বায়ার বলে পরিচয় দিতেন। তিনি বিভিন্ন কোম্পানি/প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পণ্য কেনার চুক্তি করতেন। চুক্তি অনুযায়ী পণ্যের মূল্য বাবদ ১০% হতে ৩০% পর্যন্ত ক্যাশ পরিশোধ করে এবং বাকি টাকা চেকের মাধ্যমে দেওয়ার অঙ্গীকার করতেন। কিন্তু পরবর্তীতে চেকের টাকা প্রাপকরা আর পেতেন না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পেমেন্ট ছাড়াই পণ্য নিতেন বলে জানা যায়। সে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূল হোতা।

শেখ ওমর ফারুক বলেন, প্রতারক মশিউর রহমান খান এভাবে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকার মালামাল হাতিয়ে নেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে ৯২টির ওপর মামলা রয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার কাফরুল থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।

এমএসি/এমএইচএস