পতিত কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ ও সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে ‘অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদের’ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) কর্তৃক নেওয়া প্রথম পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। 

শনিবার (২৪ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সাধুবাদ জানায় টিআইবি।

টিআইবি জানায়, প্রায় ৯০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বিলাসবহুল সম্পদ জব্দ করা-যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী পারস্পরিক আইনি সহায়তার পথ প্রশস্ত করবে, তদন্ত ত্বরান্বিত করবে এবং পাচারকৃত সম্পদ দ্রুত পুনরুদ্ধারকে সহজতর করবে। একইসঙ্গে টিআইবি যুক্তরাজ্যের এ পদক্ষেপ অনুসরণ করে অর্থ-সম্পদ পাচারের গন্তব্য অন্যান্য দেশগুলোকে নিজেদের আইনি কাঠামোর আওতায় বাংলাদেশি নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন অবৈধ সম্পদ চিহ্নিত, জব্দ এবং পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে পাচার হওয়া অর্থ-সম্পদ প্রথমবারের মতো জব্দের ঘটনায় আমরা আশাবাদী। তবে এটিকে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই, বরং এই জব্দ হওয়া অর্থ-সম্পদ হিমশৈলের চূড়ামাত্র। পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট আরও বহু ব্যক্তি বিপুল পরিমাণে অর্থ-সম্পদ পাচার করেছেন। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন। যৌথ আইনি সহায়তার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি অর্থপাচারকারীদের অবৈধ সম্পদও চিহ্নিত ও জব্দ করে দেশে ফেরত পাঠাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই আমরা।

তিনি আরও বলেন, শুধু যুক্তরাজ্য নয়, সাম্প্রতিক কয়েক দশকে যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত (বিশেষ করে দুবাই) বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ-সম্পদের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। আমরা এসব দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতিও আহ্বান জানাই, তারা যেন যুক্তরাজ্যের পদক্ষেপ অনুসরণ করে নিজেদের আইনি কাঠামো ও যৌথ আইনি সহায়তার আওতায় বাংলাদেশি নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন অবৈধ সম্পদ চিহ্নিত, জব্দ এবং পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দেশকে বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক আইনি এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও বিশেষায়িত সহায়তা কার্যকর করে পাচারকৃত অর্থ ফেরত পাঠাতে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরুর আহ্বান জানায় টিআইবি। 

এছাড়াও বাংলাদেশি নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন অবৈধ সম্পদ তাদের নিজস্ব আইনি প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে চিহ্নিত এবং জব্দ করার পাশাপাশি চুরি যাওয়া সম্পদ ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারকে তা ত্বরান্বিত করা এবং পারস্পরিক আইনি এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও বিশেষায়িত সহায়তার মতো আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করে অর্থ পাচারকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানায় সংস্থাটি।

এমএন