ওমানের সুলতান হাইতাম বিন তারিক আল সাঈদ

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ওমানের সুলতান হাইতাম বিন তারিক আল সাঈদকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

বুধবার (৬ জানুয়ারি) ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ বদর বিন হামাদ বিন হামুদ আল বুসাইদির সঙ্গে টেলিফোন আলাপে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন এ আহ্বান জানান।

টেলিফোন আলাপে কাতার ও উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সম্পর্কে অবদান রাখায় ওমানকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন আলাপে বলেন, করোনার সময়ে বাংলাদেশের প্রায় সাত লাখ প্রবাসীকে দেখভাল করেছেন এবং একজনকেও চাকরিচ্যুত হয়ে দেশে ফিরতে হয়নি। সম্পতি বিমান যাতায়াত চালু করে প্রায় ৪০ হাজার আটকেপড়া শ্রমিকদের ফেরত নিয়েছেন, এজন্য আপনাকে (ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী) ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

তাছাড়া ওমানের প্রচেষ্টায় কাতার ও সৌদী আরবের মধ্যে সমঝোতা সম্ভব হয়েছে বলে টেলিফোন আলাপে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এসময় ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। মহামারি মোকাবিলায় তথ্য আদান-প্রদানসহ দুই দেশ পরস্পরকে সহযোগিতা করতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের পারস্পারিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমান্বয়ে আরও দৃঢ় হচ্ছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনকে অবহিত করেন।

বদর আল বুসাইদি ওমানের উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, করোনার মধ্যে ওমান সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশে রয়েছে। এসময় করোনাকালীন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য মোমেন ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

চলতি বছরের শুরুর দিকে দুই দেশের মধ্যে ফরেন অফিস কনসালটেশনের (এফওসি) বিষয়ে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মতি জ্ঞাপন করেন। ওই এফওসিতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনায় সম্মত হয় উভয়পক্ষ।

দুই দেশের সরকারি ও কূটনীতিক পাসপোর্টধারীদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভিসা অব্যাহতি দেওয়া বিষয়ক চুক্তি শিগগিরই স্বাক্ষরিত হবে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দ্রুত নির্ধারণ করা হবে। ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারিকে এ বিষয়ে স্বাক্ষরকারী হিসেবে সেদেশের পক্ষ থেকে নিযুক্ত করা হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওমানে পলিথিনের বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশের পাটজাত পণ্য আমদানির আহ্বান জানান। একইসঙ্গে দেশটিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগেরও আহ্বান জানান মোমেন।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুবিধা হিসেবে মোমেন ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান, প্রতিবেশি দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আয়ের পরিমাণ বেশি থাকবে। তিনি এদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল ও অবকাঠামো উন্নয়নে ওমানের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন।

বিভিন্ন বিষয়ে পারস্পারিক সহযোগিতার চিহ্নিত করাসহ দুই দেশের ব্যবসায়ীদের পারস্পরিক সফর বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

কৃষি ও মৎস্য চাষ বিষয়ক পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মোমেন উল্লেখ করেন। এ সময় ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধিসহ সার্বিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন।

এছাড়া প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্কেরও প্রশংসা করেন তিনি।

মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সেদেশে প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে ওমানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

এনআই/এসএম