নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আইটি বিশেষজ্ঞ সাখাওয়াত আলী। সিরিয়ার ইদলিবে ছয় মাস যুদ্ধ করেন। এরপর তুরস্ক হয়ে ইন্দোনেশিয়ায় বসবাস শুরু করেন।

ইন্দোনেশিয়ায় তিনি জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। পরে চলতি বছরের ২২ মার্চ দেশে ফিরে এসেও জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন। গত শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকা থেকে সাখাওয়াত আলীকে (৪০)  গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগ। 

শনিবার (১২ জুন) চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাছিব খান ঢাকা পোস্টকে জানান, জিহাদি কার্যক্রম প্রচারের জন্য খুলশী থানার দক্ষিণ খুলশী আবাসিক এলাকার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় আহলে হাদীস জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানকালীন সময়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

১৯৯৭ সালে চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়ার পুলিশ লাইন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন সাখাওয়াত। এরপর ভারতে চলে যান। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে দেশে ফেরেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন কম্পিউটার ইনস্টিটিউটে কম্পিউটার বিষয়ক বিভিন্ন কোর্স করেন এবং ২০০৭ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। 

২০০৯ গ্রিনিজ ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে এমএসসি সম্পন্ন করেন। সেখান থেকে ২০১১ সালে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে বিভিন্ন চাকরি করেন। পরে ২০১৭ সালে তুরস্কের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন।

কাউন্টার টেররিজম সূত্রে জানা যায়, মো. সাখাওয়াত আলী ২০১২ সাল থেকে তার ভায়রা ভাই আরিফ এবং মামুনের অনুপ্রেরণায় জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। পরে সংগঠনের নেতা মোয়াজ (চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া) সহ মনসুরাবাদ এলাকার হুজুর শফিক, চট্টগ্রাম লালখান বাজার এলাকার এসির দোকানে কর্মচারী ওমর ফারুকের সহায়তায় দেশের বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যদের সংগঠিত করার লক্ষ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি। সাখাওয়াত জিহাদি কার্যক্রম প্রচারের কাজে আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। 

কাউন্টার টেররিজম বিভাগের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাছিব খান বলেন, সাখাওয়াত জিহাদে অংশগ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সালে তুরস্ক যান। তুরস্ক থেকে অবৈধপথে সীমান্ত অতিক্রম করে সিরিয়াতে প্রবেশ করেন। সেখানে  দীর্ঘ ৬ মাস হায়াত তাহরীর আরশামের কাছ থেকে ভারী অস্ত্রশস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিয়ে সিরিয়ার ইদলিব এলাকায় যুদ্ধে অংশ নেন। পরে তিনি সিরিয়া থেকে অবৈধপথে সীমান্ত অতিক্রম করে তুরস্ক হয়ে ইন্দোনেশিয়ায় প্রবেশ করেন। এরপর ইন্দোনেশিয়া থেকে শ্রীলঙ্কা হয়ে পুনরায় ইন্দোনেশিয়ায় গিয়ে বসবাস করেন। ইন্দোনেশিয়ায় বসবাসকালীন তিনি জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এরপর ২২ মার্চ দেশে এসে আবার জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন। 

সাখাওয়াত আলী (৪০) চট্টগ্রামের দামপাড়া এম এম আলী সড়কের বাসিন্দা শেখ মো. শমসের আলীর ছেলে। গ্রেফতারের পর তার বিরুদ্ধে খুলশী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতারকালে তার কাছ থেকে জিহাদি কাগজপত্র, একটি পাসপোর্ট, একটি মোবাইল, একটি ট্যাব ও একটি নোটবুক উদ্ধার করা হয়। 

কেএম/আরএইচ