পৌনে ৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৯৪ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) পরিচালক এস এম এ আজিম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (১৩ জুন) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় স্ত্রী নবতারা নূপুরকে প্রধান আসামি এবং তার স্বামী বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক এসএমএ আজিমকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এস এম এ আজিম বর্তমানে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা উপপরিচালক মুহাম্মদ আরিফ সাদেক ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অবৈধ সম্পদের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন আসামি নবতারা নূপুরকে ২০১৮ সালের ১০ জুলাই সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য নোটিশ জারি করেন। ওই বছরের ৫ নভেম্বর সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন নূপুর।

দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৩ কোটি ১৭ লাখ ১৪ হাজার ২৫০ টাকার স্থাবর ও ৪৮ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫৬ টাকার অস্থাবর সম্পদ দেখান। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, নবতারা নূপুরের নামে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৭৫ লাখ ৭৪ হাজার ১০৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, নূপুরের নামে চট্টগ্রামের ৩৭ নং ওয়ার্ডের উত্তর-মধ্য হালিশহরে ক্রয়কৃত জমির ওপর নির্মিত ৬তলা ভবনের তথ্য পাওয়া যায়। মামলায় যার মূল্য দেখানো হয় ৬৫ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪৩ টাকা। এছাড়া আসবাবপত্র বাবদ ৫০ হাজার ১৫০ টাকা, ইলেকট্রনিক্স বাবদ ১২ লাখ ৩১ হাজার ৬২৭ টাকা; ডাচ বাংলা ব্যাংকের হালিশহর শাখায় ১৫ লাখ ৭৯ হাজার ৩০৭ টাকাসহ মোট ২৮ লাখ ৬১ হাজার ৪২৯ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

এর মধ্যে নবতারা নূপুর ৬ তলা বাড়ি ও ব্যাংকে জমাকৃত টাকাসহ ৯৪ লাখ ২৮ হাজার ১৭২ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন বলে অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে। যা দুদক আইনের ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অন্যদিকে অনুসন্ধানকালে নূপুরের নামে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ৭৫ লাখ ৭৪ হাজার ১০৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৯০ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৪ টাকার সম্পদের যুক্তিসংগত উৎস পাওয়া গেছে।   

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক এস এম এ আজিম দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ আড়াল করার জন্য স্ত্রীর নামে এসব করেছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে দুদক। যে কারণে মামলার এ অংশে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে।

আরএম/এসকেডি/