জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম

অভিনেত্রী পরীমণিকে ধর্ষণ এবং হত্যা চেষ্টার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম। এমন ঘটনা কখনওই কাম্য নয় বলেও তিনি জানান। সোমবার (১৪ জুন) ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি জানান।

নাছিমা বেগম বলেন, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে আমি বলব, সবার যেকোনো পেশা বেছে নেওয়ার অধিকার আছে। এই পেশাকে কেন্দ্র করে তাকে (পরীমণি) যেভাবে নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

তিনি বলেন, ‘নারীদের প্রতি যে বিদ্বেষমূলক মনোভাব, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা মেনে নেওয়ার মতো বিষয়ও না। এখন যেহেতু মামলা হয়েছে এবং আসামি গ্রেফতার হয়েছে, আমরা চাই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হোক।’

এদিকে চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

পরীমণির মামলা

ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার করেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমণি। সোমবার (১৪ জুন) সাভার থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। এর আগে সকালে রূপনগর থানার মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ করেন পরীমণি।

সাভার থানার পরিদর্শক কাজী মাইনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরীমণি নিজে বাদী হয়ে মোট ৬ জনের নামে এ মামলা করেছেন (মামলা নম্বর ৩৮)। মামলা সূত্রে জানা যায়, ৯ জুন (বুধবারে) রাতে ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা করা হয়। 

রোববার (১৩ জুন) রাতে প্রথমে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেন এই অভিনেত্রী। পরে তার নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সামনে এ ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বুধবার রাতে উত্তরার বোট ক্লাবে ঘটনাটি ঘটে। নাসির উদ্দিন নামে একজন তাকে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে এ ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলেন।

পরীমণি বলেন, এমন ঘটনায় সাধারণ মেয়েরা প্রথমে কোথায় যায়? থানায় যায়। আমিও থানায় গিয়েছি। আমি বারবার বলেছি, ঘটনাটা যদি নিজের সঙ্গে না ঘটে তাহলে কেউ বুঝবে না। ওইদিন পর্যন্ত কি তবে অপেক্ষা করবেন? 

কী ঘটেছিল সেটা জানতে চাই, আপনি নির্ভয়ে বলুন— উপস্থিত সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পরীমণি বলেন, আমার মুখটা সাদা কাপড়ে ঢাকা পড়লেই কেবল বুঝতেন। আমি চার দিন ধরে কারও সাপোর্ট পাইনি। আপনারা সত্যিটা খোঁজেন।

পরীমণি আরও বলেন, সাধারণ কোনো মেয়ের হলে সে খবর হয়তো আপনাদের কাছে পৌঁছায় না। সাংবাদিকদের কাছে খবর পৌঁছানো হয় না। আমার মতো যখন কোনো মেয়েকে ভয় দেখানো হয় তখন সাধারণ মেয়ের খবর তো পাবেন না!

তিনি বলেন, বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে তার এক বন্ধু (অমি) বাসায় আসেন। বাসা থেকে তাকে উত্তরার বোট ক্লাবে (ঢাকা বোট ক্লাব) নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জিমি (ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী)। বোট ক্লাবে যাওয়ার পর সেখানে সাত/আটজনের একটা গ্রুপ ছিল। তাদের মুরব্বি ছিলেন নাসির উদ্দিন (নাসির ইউ মাহমুদ)। তিনি বোর্ড ক্লাবের চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দেন।

‘নাসির উদ্দিনসহ (নাসির ইউ মাহমুদ, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী) উপস্থিত সাত/আটজন আমাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করতে থাকে। আমাকে আটকে ফেলে। জোর করে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে অজ্ঞান করার চেষ্টা করে। জিমিকে মারধর করা হয়। অশ্লীল নানা কথাবার্তা বলা হয়। মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।’

নাসির উদ্দিন (নাসির ইউ মাহমুদ) তার সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ করেন পরীমণি।

এমএইচএন/এমএইচএস