দেশে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে চিকিৎসক সংকট। সরকারি হাসপাতালে শূন্য পদ দিন দিন বেড়েই চলছে। বিশেষ করে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসক সংকট এখন চরম আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের নৈর্ব্যক্তিক (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৪ হাজার ৬৯৫ জন চিকিৎসকের সবাইকে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে প্রার্থীরা।

বুধবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খাঁ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘৪৮তম বিশেষ বিসিএস চূড়ান্ত ফলপ্রত্যাশী চিকিৎসক ফোরাম’র ব্যানারে এই দাবি জানানো হয়।

সংগঠনের আহ্বায়ক ডা. গোলাম সামদানী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বর্তমানে প্রায় ১২ হাজার ৯৮০টি চিকিৎসক পদ শূন্য। এই শূন্যপদ পূরণ না হলে তৃণমূলের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ভেঙে পড়বে। তাই ৪৮তম বিশেষ বিসিএসে উত্তীর্ণ সব প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি পূর্বঘোষিত সংখ্যার বাইরে আরও অন্তত ২ হাজার চিকিৎসক বাড়তি নিয়োগ দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ৪৫তম, ৪৬তম ও ৪৭তম বিসিএসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর বহু চিকিৎসক পদত্যাগ করেছেন। ফলে অনেক পদ আবার শূন্য হয়ে পড়েছে। ‘যদি এবারও সীমিতসংখ্যক নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে সংকট মেটানোর বদলে আবারও ঘাটতি থেকে যাবে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা মনে করিয়ে দেন, ৩৯তম ও ৪২তম বিশেষ বিসিএসেও নির্ধারিত সংখ্যার বাইরে অতিরিক্ত প্রায় ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবায় কিছুটা স্বস্তি ফেরে। একই ধারা অনুসরণ করলে এবারও কার্যকর সমাধান পাওয়া সম্ভব বলে তারা মনে করেন।

ফোরামের সদস্যরা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসক না থাকায় প্রতিদিন হাজারো রোগী সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ছাড়া বিদ্যমান চিকিৎসকদের ওপর পড়ছে অযৌক্তিক চাপ, যা সেবার মান কমিয়ে দিচ্ছে।

চিকিৎসকরা বলেন, যত দ্রুত নিয়োগ হবে, তত দ্রুত তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি হবে। দেরি হলে সংকট আরও গভীর হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন এবং সরকারকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, চিকিৎসক সংকট মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।

টিআই/বিআরইউ