ঢাকায় জলবায়ু উৎসব
সুইস দূতাবাসের উদ্যোগে ‘ফ্রেন্ডস অব ক্লাইমেট’ শপথ
রাজধানীর ঢাকায় সুইস দূতাবাসের উদ্যোগে ‘বায়োফিলিয়া : রিকানেক্টিং পিপল, ক্লাইমেট অ্যান্ড কালচার’ শীর্ষক একটি জলবায়ু উৎসব শুরু হয়েছে। এই উৎসবে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে লড়াই করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প তুলে ধরা হচ্ছে, যেখানে সংস্কৃতি, সমাজ এবং স্থানীয় উদ্ভাবনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিকেলে ‘ফ্রেন্ডস অব ক্লাইমেট’ নামে একটি বিশেষ শপথ অনুষ্ঠান হবে, যেখানে সরকারি উপদেষ্টা, বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সাধারণ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা জলবায়ু সুরক্ষার জন্য কাজ করার অঙ্গীকার করবেন।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু হয়। উৎসবের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় স্থানীয় মানুষের জীবনযাপন, অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বই সবচেয়ে বড় শক্তি। আমাদের হাতে সীমিত সময় ও সম্পদ রয়েছে, তাই যৌথভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। এ সংকট কেবল টিকে থাকার প্রশ্ন নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তা ও বহু রাষ্ট্রের অস্তিত্বের সঙ্গেও জড়িত।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ভৌগোলিক অবস্থান ও বদ্বীপ দেশ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। আমাদের জনগণ সাহসিকতার সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলা করছে, কিন্তু পর্যাপ্ত প্রশমন কার্যক্রম ও আন্তর্জাতিক সহায়তা না থাকায় সক্ষমতা বারবার সীমায় এসে ঠেকছে। অভিযোজনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়ন ও প্রযুক্তিগত সহায়তা এখনো প্রত্যাশিত মাত্রায় পাওয়া যাচ্ছে না।
সুইস দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স করিন হেনচোজ পিগনানি উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, জলবায়ু সংকটের সমাধান শুধু বৈশ্বিক দরকষাকষি নয়, সমাধান আছে কৃষক, জেলে, নারী ও তরুণদের বাস্তব অভিজ্ঞতায়। তারাই ইতিমধ্যে মানিয়ে নিচ্ছেন, উদ্ভাবন করছেন এবং নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, উৎসবের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সুইস সরকারের সহায়তায় পরিচালিত ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন অ্যাট লোকাল লেভেল (সিএএলএল)’ কর্মসূচি। সুইজারল্যান্ডের নয়টি এনজিও ও ১৮টি স্থানীয় সংগঠন যৌথভাবে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এতে টেকসই কৃষি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে প্রাথমিক সতর্কবার্তা ব্যবস্থার নানা উদ্ভাবনী কার্যক্রম তুলে ধরা হয়।
দিনব্যাপী আয়োজনে রয়েছে নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সাঁওতাল সম্প্রদায়, বাউল শিল্পী ও শহরের তরুণ শিল্পীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় ‘সাউন্ডস অব দ্য সয়েল’। প্রদর্শিত হয় জলবায়ু গল্পভিত্তিক আলোকচিত্র, অংশগ্রহণমূলক শিল্পকর্ম, টেকসই ফ্যাশন শো এবং জলবায়ু সংকটভিত্তিক নাটক। আর সন্ধ্যায় পরিবেশনা করে জনপ্রিয় ব্যান্ড জলের গান।
সবশেষ সমাপনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের।
এ সময় অনুষ্ঠিত হবে ‘ফ্রেন্ডস অব ক্লাইমেট’ শপথ অনুষ্ঠান। সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফজলুল কবির খান শপথ পাঠ করাবেন।
আরএইচটি/এমএন