শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি’ ব্যানারে মানববন্ধন

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে বিকল্প খুঁজতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি যে প্রস্তাব দিয়েছে তার তীব্র নিন্দা এবং বাতিল দাবি করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

বুধবার (১৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি’ ব্যানারে এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান।

সমাবেশে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডাক্তার ফওজিয়া মোসলেম বলেন, আজ প্রশাসনে থাকা সকল নারীরা রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে সহিংসতার শিকার হয়েছি। যারা এই সুপারিশ দিয়েছেন তারা আমাদের প্রশাসনকে ধর্ষণ করতে চেয়েছে, আমাদেরকে সহিংসতার শিকার করতে চেয়েছে। এটি শুধু তিন-চার লাইনের সুপারিশ নয়, এটার মধ্যে অনেক বিষয় ও অনেক গভীরতা আছে। তা বুঝে আমাদের এর বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। এর বিরুদ্ধে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, প্রশাসনকে সচেতন হতে হবে।

সংবিধানের ২৮নং অনুচ্ছেদে নারী-পুরুষ সমান অধিকারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা সমান অধিকারের পরিপন্থী কাজ করেছেন, তারা অসাংবিধানিক কাজ করেছেন। তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে অকেজো করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হলো, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিকশিত করা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে গবেষণা করা। আজ মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে অনেক দুরে চলে যাচ্ছে। এটি কি রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ হচ্ছে না? আমাদের দাবি হলো- যারা নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশের মূলনীতির বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন, রাষ্ট্রকে তাদের শাস্তির বিধান করতে হবে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, এই রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানকে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সাথে জড়িত করাটা কিন্তু এক ধরনের উস্কানির পায়তারা। আমি দেখি এই সুপারিশের মধ্যে অবশ্যই কম করে হলেও তিনটি দিক আছে- সাম্প্রদায়িকতার পক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে, সংবিধানের বিরুদ্ধে। এগুলো করতে গেলে অবশ্যই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতির বাইরে যাবে। সাংসদের আরও দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিকদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত স্থানে নিক্ষেপ করার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডাক্তার ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সদস্য রাখী জামান, ‘উই ক্যান বাংলাদেশ’র সদস্য সুরাইয়া পারভীন, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের সদস্য সেলিনা পারভীনসহ আরও অনেকে। মানবন্ধনে সংহতি জানিয়েছে আদিবাসী যুব পরিষদ।

এইচআর/এইচকে