পবিসের দাবিদাওয়া সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করছে সরকার
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) দাবিদাওয়া সরকার সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করেছে। ফলে আন্দোলনকারীদের দ্রুত কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) এক বার্তায় এ তথ্য জানায় বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) মধ্যে বিদ্যমান অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাঠামো পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা পর্যালোচনার জন্য ২ তারিখে দু’টি কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটিগুলো তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
বিজ্ঞাপন
‘কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বাপবিবো কর্তৃক বিভিন্ন তারিখে পবিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলিগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয় এবং পর্যায়ক্রমে সাময়িক বরখাস্ত ও অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পর্কে সহানুভূতিশীল হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’
আরো বলা হয়, এতদসত্ত্বেও গত ৭ সেপ্টেম্বর তারিখ থেকে একশ্রেণির পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মচারী তথাকথিত ‘গণছুটি’র নামে অন্যদের কাজে বাধা দেওয়ার মতো আইনবহির্ভূত কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। সরকার সহনশীলতার সঙ্গে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়ে তাদের কাজে যোগদান করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে বেশকিছু সংখ্যক কর্মচারী ছুটি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেন এবং অনেকে বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে কাজে যোগদান করতে সক্ষম হননি বলে জানা যায়। সরকার পর্যায়ক্রমে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া ও অভিযোগগুলো সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করছে। যেকোনো প্রক্রিয়ায় সাময়িকভাবে বরখাস্তকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ক্ষমা প্রার্থনা করে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত না হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে সরকার তাদের বরখাস্তের আদেশ পুনর্বিবেচনা করবে।'
বার্তায় আরো জানানো হয়,পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অন্যতম দাবি হলো-পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ক্রয় কার্যক্রমের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ। এ বিষয়ে সরকার একজন সাবেক সচিবের নেতৃত্বে বাপবিবো এবং পবিসের অভিজ্ঞ কর্মকর্তা এবং বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রকিউরমেন্ট সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো, বিশেষ করে বিগত পাঁচ বছরে ক্রয় প্রক্রিয়া, ক্রয় পরিকল্পনা, প্রাক্কলিত মূল্য, দরপত্র পদ্ধতি, পণ্য ও অন্যান্য সরঞ্জামের স্পেসিফিকেশন ইত্যাদি ক্ষেত্রে পিপিআর-২০০৮ এর বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছে কি না এবং দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে কি না তা যাচাইপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এছাড়াও, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভবিষ্যৎ কাঠামো সম্পর্কে ইতিপূর্বে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন ও অন্যান্য অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া, যেখানে আইন সংশোধন, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো ও অন্যান্য অংশীজনের মতামত গ্রহণ এবং আর্থিক বিষয়াদির নিবিড় পর্যালোচনা প্রয়োজন। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যমান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্মচারী চাকরিবিধি, ১৯৯২ (সংশোধিত-২০১২) হালনাগাদকরণ করা হবে। এর ফলে পবিস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিগত প্রশাসনিক ও আর্থিক বিভিন্ন যৌক্তিক দাবিগুলো বিবেচনা করা সম্ভব হবে।
এই প্রেক্ষিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে বাধা দেওয়ার মতো আইনবহির্ভূত কাজ থেকে বিরত থাকতে এবং অবিলম্বে কাজে ফিরে আসার জন্য পুনরায় নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায় বিদ্যুতের মতো অত্যাবশ্যকীয় সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর গণছুটির আবেদন গ্রহণপূর্বক সরকার তা স্থায়ী ছুটিতে রূপান্তর করতে বাধ্য হবে।
ওএফএ/বিআরইউ