পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের দুই সপ্তাহের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। দীর্ঘ ১৭ দিনেও ফোনটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি গ্রেফতার করা যায়নি ছিনতাইকারীকেও। তবে ছিনতাই হওয়া ফোনটি উদ্ধার ও ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরিকল্পনামন্ত্রীর ফোনটি এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার হাত বদল হয়েছে। প্রথম ছিনতাইকারী ফোনটি এক দোকানে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। পরে সেই দোকান থেকে কোনো একজন ক্রেতা ফোনটি ২৫-৩০ হাজার টাকায় কিনেছেন। তবে ওই ক্রেতা এখন পর্যন্ত সিমকার্ড দিয়ে ফোনটি চালু করেননি। তাই ফোনটির অবস্থান শনাক্ত করতে পারছে না পুলিশ।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জিএম ফরিদুল আলম বুধবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি আইফোন উদ্ধার করেছি। কিন্তু এর মধ্যে একটিও পরিকল্পনামন্ত্রীর ফোন ছিল না। এখন আমাদের ভরসা ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা। তাকে গ্রেফতার করলে ফোনটি শেষ কার হাতে গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। তাকে গ্রেফতারের জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৪ জুন) পরিকল্পনামন্ত্রীর ফোন ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছিলেন ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন।

তিনি বলেছিলেন, পরিকল্পনামন্ত্রীর ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় একজনকে আমরা শনাক্ত করেছি। ছিনতাইয়ের ঘটনার আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। তার নাম ঠিকানা ও পরিচয় পুলিশের হাতে এসেছে। তাকে এখন গ্রেফতারের অভিযান চলছে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তিনি রাজধানীর বিজয় সরণি এলাকায় ভাসমান অবস্থায় জীবন যাপন করতেন। বিজয় সরণি এলাকার উড়োজাহাজের ভাস্কর্যের নিচে প্রতি রাতে ঘুমাতেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ জুন) কাফরুল থানা পুলিশ বলেছিল, চন্দ্রিমা উদ্যানের ভেতরের টোকাই-ছিনতাইকারী, শেরে বাংলা মাঠ সংলগ্ন এলাকার টোকাই, আগারগাঁওসহ আশপাশের এলাকার স্থানীয় ও সন্দেহভাজনদের থানায় আনা হয়েছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মোবাইলের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

যেভাবে ঘটেছিল ঘটনাটি

৩০ মে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে বের হয়ে বিজয় সরণি সিগন্যালের জটে পড়ে মন্ত্রীকে বহনকারী গাড়ি। এ সময় মন্ত্রী গাড়ির গ্লাস খুলে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। তখনই এক ছিনতাইকারী তার হাত থেকে মোবাইলটি ‘ছোঁ’ মেরে কেড়ে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে একই দিনে ডিএমপির কাফরুল থানায় মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী একটি মামলা করেন।

চুরি যাওয়া ফোন নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ৩০ মে সন্ধ্যায় অফিস থেকে বের হয়ে ৬টা ৪৫ মিনিটে বিজয় সরণি এলাকায় গাড়িটি সিগন্যালে অপেক্ষা করছিল। এ সময় গাড়ির এসি বন্ধ করে দিয়ে কাঁচ নামিয়ে দেই। আমি পেছনের সিটে বসা ছিলাম, আমার হাতে মোবাইল ছিল। আমি মোবাইলে কিছু একটা করছিলাম। হয়তো নিউজ পড়ছিলাম। হঠাৎ করে এক ঝলকে অবিশ্বাস্য রকম গতিতে ঝড়ের মতো এসে হাত থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে চলে গেল। আমি দেখিনি লোকটাকে। আমাদের লোক গাড়ি থেকে নামল। কিন্তু ওই ৩০-৪০ সেকেন্ডের মধ্যে লোকটা কোথায় মিশে গেল!

এমএসি/এসকেডি