চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রেফতার

রাজধানীর খিলক্ষেত-কুড়িল বিশ্বরোড-এয়ারপোর্ট এলাকায় একটি চক্র প্রাইভেটকারসহ অবস্থান নেয় এবং গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে সর্বস্ব লুটপাট করে হাত-পা বেঁধে যাত্রীদের নির্জন স্থানে ফেলে দেয়।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এ চক্রের পাঁচ সদস্যকে বুধবার (১৬ জুন) তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতাররা হলেন- চক্রের প্রধান মো. মানিক মিয়া, মো. জাকির হোসেন, আরিফ, হযরত আলী ও জাহিদ হোসেন।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেটকার, একটি মোবাইল ফোন, ছুরি, গামছা, স্কচটেপ, ইলেকট্রিক তার, স্ক্রু-ড্রাইভার ও লোহার তৈরি লিভার উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, চক্রটি ঢাকার খিলক্ষেত, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে ভুলতা, গাউছিয়া, ময়মনসিংহ, শেরপুরে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে কৌশলে যাত্রী ওঠায়। পরে যাত্রীর গলায় ইলেকট্রিক তার পেঁচিয়ে, গামছা দিয়ে চোখ ও হাত বেঁধে, মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে কিংবা গলায় ছুরি ধরে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে যাত্রীর সর্বস্ব লুট করে নিয়ে নির্জন স্থানে ফেলে দিয়ে চলে যায়।

সংবাদ সম্মেলন

তিনি বলেন, আরিফুল ইসলাম নামে একজন গত ২০ মে রাত সাড়ে নয়টায় বাসায় ফিরতে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অপেক্ষা করছিলেন। তার মতো আরো কয়েকজন অপেক্ষা করছিলেন। কিছু সময়ের মধ্যে একটি প্রাইভেটকার আসে, সামনে থেকে ছুটে যান কয়েকজন। তাদের পিছু পিছু যান আরিফুলও। একটি সিট পেয়ে তিনিও গাড়িতে উঠে বসেন। তাকে মাঝখানে বসিয়ে গাড়ি সামনে যায়। কিছুদূর যেতেই দুপাশ থেকে দুজন চেপে ধরে আরিফুলকে। তার ফোন, নগদ টাকা ও বিকাশের পিন নাম্বার কেড়ে নেওয়া হয় এবং চোখে স্প্রে করে গাজীপুরের কালিগঞ্জে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়।

এ ঘটনায় আরিফুল খিলক্ষেত থানায় মামলা করেন। এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ডিবির উত্তরা বিভাগ বুধবার (১৬ জুন) রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা থেকে চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ভিকটিম আরিফুলের আশপাশে আরও কিছু লোক ছিল। তারাও বাসের জন্য অপেক্ষা করার অভিনয় করছিলেন। মূলত তারাও এ চক্রের সদস্য। হঠাৎ আসা একটি প্রাইভেটকারে অন্যদের সঙ্গে উঠতে গিয়ে ফাঁদে পড়েন আরিফুল। তাই রাইড শেয়ারের আগে সতর্ক থাকতে নগরবাসীকে পরামর্শ দেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজধানীর সড়কগুলো পুরোপুরি সিসিটিভির আওতায় আনতে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। রাজধানীতে অনেকগুলো কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছে, সেগুলো কেন্দ্র করে অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। সড়কগুলো আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে উন্নত প্রযুক্তির সিসিটিভির আওতায় আনা সম্ভব হবে। এর ফলে ফুটেজে মানুষের চেহারা কিংবা গাড়ির নম্বরপ্লেট স্পষ্ট দেখা যাবে।

এমএসি/আরএইচ