টিকাদান কর্মসূচি শক্তিশালী করতে শূন্যপদে নিয়োগ ও বাজেট নিশ্চিত করতে হবে
জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে টিকাদান কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী করতে অবিলম্বে শূন্যপদে নিয়োগ সম্পন্ন করা, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নিজস্ব টিকাদান কর্মী নিয়োগ করা এবং বাজেট বরাদ্দ ও বিতরণ দ্রুত নিশ্চিত করা উচিত।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইউনিসেফ বাংলাদেশ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. নিজাম উদ্দিন আহমেদ এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের হেলথ ম্যানেজার ড. রিয়াদ মাহমুদ।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
বক্তব্যে বলা হয়, টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫’-এর আওতায় ৬ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি সব শিশুকে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। তবে টিকাদান কার্যক্রমের সম্প্রসারণে কিছু চ্যালেঞ্জ এখনও বিদ্যমান। টিকাদান প্রকল্পে বরাদ্দকৃত জনবলের প্রায় ৪০ শতাংশ পদ এখনও শূন্য, যার মধ্যে স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ইপিআই টেকনিশিয়ান/পর্যবেক্ষকসহ ইপিআই সদর দপ্তরের ৪৩ শতাংশ পদও শূন্য। ৪০টি জেলায় টিকাদান কর্মী নিয়োগ এখনও সম্পন্ন হয়নি। জেলা পর্যায়ে কোল্ড চেইন টেকনিশিয়ানের পদে শূন্যতার হার ৫৩ শতাংশ। বাজেট বরাদ্দে দেরি হওয়ায় জেলা পর্যায়ে টিকার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। ভৌগোলিক অবস্থার ভিত্তিতে টিকাদান কেন্দ্র ও কর্মীদের সুষ্ঠু বণ্টন না থাকায় দুর্গম ও উচ্চঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত টিকাদান কেন্দ্র ও কর্মীর অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। নগর এলাকায় কার্যকর টিকাদান কৌশল ও পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় সেখানে কর্মসূচির ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া জনসংখ্যা নির্ভুলভাবে নির্ধারণ না হওয়ায় টিকাদানের লক্ষ্য নির্ধারণে অসামঞ্জস্যতা তৈরি হচ্ছে এবং টিকা বরাদ্দে জটিলতা দেখা যাচ্ছে।
‘জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে টিকাদান কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী করতে সরকারের উচিত অবিলম্বে শূন্যপদে নিয়োগ সম্পন্ন করা, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নিজস্ব টিকাদান কর্মী নিয়োগ করা এবং বাজেট বরাদ্দ ও বিতরণ দ্রুত নিশ্চিত করা। ভ্যাকসিন সরবরাহ ও সরকারি বাজেটের আওতায় কোল্ড চেইন রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা (যা বর্তমানে ইউনিসেফের সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে) নিশ্চিত করতে হবে।’
বক্তব্যে আরও বলা হয়, টিকাদান কার্যক্রম আরও জোরদার করতে বাংলাদেশ সরকার টিকাদানের জন্য ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করেছে এবং ইতোমধ্যে ২৪টি জেলায় টিকাদান কর্মী নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া, ইউনিসেফের সহায়তায় টিকার ঘাটতি সমস্যা আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে, ফলে সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম আরও নির্বিঘ্নভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে। আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত নতুন টিকা টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন দেশব্যাপী পরিচালিত হবে, যার ফলে প্রায় ৫ কোটি শিশুকে টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে টিকা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ইউনিসেফ বাংলাদেশের চিফ (হেলথ) ড. চন্দ্রশেখর সোলোমন, ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন পরিচালিত গবেষণা প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার ড. মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
ওএফএ/এআইএস