চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত নতুন উপজেলার সীমানা নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ
চট্টগ্রামের প্রস্তাবিত ‘ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলার সঙ্গে বৃহত্তর সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডকে সংযুক্ত করার প্রস্তাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রস্তাবিত উপজেলা থেকে উল্লিখিত এলাকাগুলো বাদ না দিলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) নগরের একটি কনফারেন্স হলে ’বৃহত্তর সুয়াবিল অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম’ নামে একটি সংগঠনও এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
এতে বক্তারা বলেন, সরকারের প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে ফটিকছড়ি উত্তর উপজেলা গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আমরা সরকারের উন্নয়নমূলক উদ্যোগকে স্বাগত জানাই, তবে এতে সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডকে সংযুক্ত করার প্রস্তাব আইনি জটিলতা তৈরি করবে। এ নিয়ে বৃহত্তর সুয়াবিলের জনগণ উদ্বেগ ও ক্ষোভ জানিয়েছে। প্রশাসনিক বিভাজনে জনগণের মতামতকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ও হালদা নদী গবেষক প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া।
তিনি বলেন, ‘সুয়াবিল ইউনিয়ন ফটিকছড়ি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী অংশ। ফটিকছড়ি সদরের সঙ্গে সুয়াবিল ইউনিয়নের দূরত্ব যেখানে মাত্র ৫ কিলোমিটার, সেখানে প্রস্তাবিত নতুন উপজেলার কেন্দ্র থেকে দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। এ অবস্থায় উত্তর ফটিকছড়ি উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করার মাধ্যমে সুয়াবিলের জনগণকে প্রশাসনিক ও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে।’
চবির এই প্রফেসর অভিযোগ করেন, ‘মাঠ প্রশাসনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে কিংবা জেলা প্রশাসকের পাঠানো সুপারিশে সুয়াবিল ইউনিয়ন বা নাজিরহাট পৌরসভার কোনো অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল না। পরবর্তীতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভৌগলিক তথ্য বিকৃত করে নাম সংযোজন করা হয়েছে।’
‘এর প্রতিবাদে ইতোমধ্যে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গণস্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি জমা দিয়েছে এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে যদি দাবি মানা না হয়, তাহলে স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ, ঘেরাও ও গণঅনশনের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে,’ তিনি হুঁশিয়ার করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর পরিচালক রকিবুল আলম চৌধুরী প্রস্তাবিত ‘ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলার সদর দপ্তর যৌক্তিক স্থানে স্থাপনের দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘ফটিকছড়ির আয়তন ফেনী জেলা থেকেও বড়। এখানে তিনটি উপজেলা বাস্তবায়নের দাবি বহু আগের। সরকার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের কিছু ইউনিয়ন নিয়ে ‘ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলা নামে আলাদা উপজেলা প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যা অত্যন্ত আনন্দের। তবে অবশ্যই সেই উপজেলার সদর দপ্তর হতে হবে যৌক্তিক হিসেবে নারায়ণহাটের আশেপাশে। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আবারও ভুজপুরে উপজেলা নিয়ে যাওয়ার জন্য দক্ষিণ ফটিকছড়ির সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডকে সংযুক্ত করা হচ্ছে।
এমআর/বিআরইউ