চট্টগ্রামে যানবাহনের গতিসীমা নিয়ে মাসমিডিয়া ক্যাম্পেইন শুরু
নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে যানবাহনের গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে মাসমিডিয়া ক্যাম্পেইন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) সম্মেলন কক্ষে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ভিডিও চিত্র দেখানোর মাধ্যমে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন।
বিজ্ঞাপন
মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা-২০২৪ সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে এই ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে চসিক। ‘ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি’ (বিআইজিআরএস) কর্মসূচির আওতায়, বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের কারিগরি সহায়তায় এর প্রচারণা উপকরণ তৈরি করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, নিরাপদে গাড়ি চালানোর অন্যতম শর্ত হচ্ছে নির্ধারিত গতিসীমা মেনে চলা। গতিসীমা মানলে জীবন বাঁচবে। এই কাজ চসিক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চালিয়ে যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, এখন সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা অনেক বেড়েছে, যেগুলোর গতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। আমরা এসব ঝুঁকিপূর্ণ যান নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।
মেয়র জানান, ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরে ৩৬২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন ১১ শতাধিক মানুষ। ২০২৪ সালের তথ্য বিশ্লেষণ শেষে নতুন প্রতিবেদন প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে।
তিনি আরও বলেন, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আমরা ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভস’– অর্থাৎ ‘নিরাপদে গাড়ি চালান, জীবন বাঁচান’ স্লোগান ব্যবহার করছি। জীবন বাঁচানোর এই প্রচেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখব।
বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ–পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক দক্ষিণ) লিয়াকত আলী খান বলেন, নগরে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে। চসিকের এ ক্যাম্পেইন চালকদের সচেতন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিআইজিআরএসের এনফোর্সমেন্ট কোঅর্ডিনেটর কাজী হেলাল উদ্দিন বলেন, বিশ্বের ২৭টি শহরে বিআইজিআরএস কর্মসূচির আওতায় সড়ক দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব কমাতে কাজ চলছে। গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ৫ শতাংশ গতি কমালে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ৩০ শতাংশ কমে।
ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের কারিগরি উপদেষ্টা আমিনুল ইসলাম সুজন জানান, ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে ৩০ সেকেন্ড থেকে ৯০ সেকেন্ড পর্যন্ত বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের ভিডিও চিত্র তৈরি করা হয়েছে। এগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ইউটিউব, ওয়েবসাইট ও সড়কের ডিজিটাল স্ক্রিনে প্রচার করা হবে।
ভিডিও চিত্রে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তরুণ সংগঠক আরিফুল ইসলামের সহধর্মিণী রেবেকা সুলতানা নীলা অংশ নেন। তিনি নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সবাইকে সড়কে গতিসীমা মেনে চলার আহ্বান জানান।
এ ছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সড়কের পাশে স্থাপনের জন্য দুই ধরনের পোস্টার উন্মোচন করা হয়। এসব উপকরণ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) মাধ্যমে প্রচার করা হবে।
এমআর/বিআরইউ