নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে ১১টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাবের দাবি, ‘আধিপত্য বিস্তারের’ উদ্দেশ্যে অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করেছিলেন তারা, আর এগুলো আনা হয়েছিল পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে নদীপথে।’

এর বাইরে কক্সবাজারের মহেশখালী থেকেও অস্ত্র সংগ্রহ করতো তারা।

নরসিংদীর রায়পুরা থানার সায়েদাবাদ এলাকায় শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতভর ‘সাঁড়াশি অভিযান’ চালিয়ে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন– মো. শফিক মিয়া (৩২), মো. মোস্তফা (৩৮), আয়নাল (৩৮), মহিউদ্দিন হৃদয় (২২), বাচ্চু মিয়া (৬২), কালু মিয়া (৬৯), মো. বাছেদ (৪০) ও ১৭ বছর বয়সি এক কিশোর।

উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৫টি একনলা বন্দুক, ১টি দুইনলা বন্দুক, ২টি এলজি, ১টি পাইপগান, ৩টি ম্যাগাজিন ও ৩৫ রাউন্ড গুলি।

এ বিষয়ে জানাতে শনিবার (১ নভেম্বর) কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ অধিনায়ক(সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এই অস্ত্রগুলো পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে সীমান্ত পার হয়ে নদী পথে নিয়ে আসা হতো।

তিনি বলেন, কক্সবাজারের মহেশখালী পাহাড়ি এলাকায় কিছু কারিগর রয়েছে, সেখান থেকেও অস্ত্রগুলো কালেক্ট করতো। কখনো কখনো সেখান থেকে কারিগর নিয়ে এসে বানাতো বলেও আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।

র‌্যাব জানায়, নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায়শই বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য– গত ২৮ সেপ্টেম্বর নরসিংদীর চরাঞ্চলে সংঘর্ষে গুলিতে একজন নিহত হয়, ৯ সেপ্টেম্বর রায়পুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত এবং একজন আহত হওয়া, ২০ জুলাই রায়পুরায় চরাঞ্চলে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নারী নিহত হয় এবং ২২ এপ্রিল নরসিংদীর সদর উপজেলার চরাঞ্চল আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের গুলিতে একজন নিহতের ঘটনা ঘটে।

এসব সংঘর্ষের পেছনে আধিপত্য বিস্তার, বালুমহল, চর, ঘাট, বাজার দখলকে ঘিরে এলাকাভিত্তিক গ্রুপগুলো রয়েছে।

এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর ধারাবাহিকতায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতভর অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান র‌্যাব জানায়-১১ অধিনায়ক।

তিনি বলেন, অভিযানের সময় তারা আমাদের উপরেও হামলা করার চেষ্টা করেছে, ককটেল বিস্ফোরণসহ শটগানের গুলি। তবে সেইফলি আমরা অভিযানটা শেষ করতে পেরেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, যে অপরাধ করে, সে কোন দলের আমাদের দেখার বিষয় না। অস্ত্র যদি দুস্কৃতিকারীর কাছে থাকে বিভিন্ন অরাজকতা সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করতেই পারে। এজন্য আমরা যেটা করছি অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছি, অভিযান চলমান রয়েছে।

অস্ত্রগুলো কার মাধ্যমে তাদের হাতে আসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা ব্যবহার করে থাকে, তাদের বিভিন্ন গ্রুপ আছে এলাকাভিত্তিক। তারা বলেছে আবার বর্ডারকেন্দ্রীক কিছু গ্রুপ থাকে, আমরা তথ্য কালেকশন করছি।

তিনি বলেন, নৌপথটা একটু আনসিকিউরড থাকে। অস্ত্রগুলো নিয়ে আসতে তারা নৌ পথটাকে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু অভিযান চলমান আছে, চলমানের কারণেই কিন্তু অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে।

জেইউ/বিআরইউ