• এমআরটি পাস পেতে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক
• বিনা ভাড়ায় ট্রেনে চড়লে ভাড়ার ১০ গুণ জরিমানা/কারাদণ্ড
 
ঢাকায় মেট্রোরেলে চড়তে লাগবে ‘এমআরটি পাস’। স্মার্টকার্ডের মতো এটি। প্রথমদিকে মেট্রোরেল স্টেশন, চুক্তিবদ্ধ ব্যাংক বা মেট্রোরেল কার্যালয় থেকে যাত্রীরা এটি সংগ্রহ করতে পারবেন। এতে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা রিচার্জ করা যাবে।

ভাড়ার হার অনুযায়ী এ কার্ড থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকা কেটে নেওয়া হবে। কার্ডটির মেয়াদ হবে ১০ বছর। ব্যবহার করতে করতে যদি এটি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নতুন করে কার্ডটি সরবরাহ করবে। ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ- ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি (ডিএমটিসিএল) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ডিএমটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, কার্ডটির নাম হবে ‘এমআরটি পাস কার্ড’। গ্রাহক একবারই এটি সংগ্রহ করবেন। এজন্য লাগবে জাতীয় পরিচয়পত্র। ঘরে বসেই এটি রিচার্জ করা যাবে। গ্রাহক চাইলে মোবাইলের খুদে বার্তায় দেখতে পাবেন তার পাস কার্ডে কত টাকা আছে। 

বিদেশিরাও এ কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। ইচ্ছা করলে কার্ড জমা দিয়ে এর অব্যবহৃত টাকাও ফেরত নিতে পারবেন। এ কার্ড তৈরির সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএমটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, কার্ডের নকশা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এখন সেখানে ভাড়ার বিষয়টি যোগ করতে হবে। ভাড়ার হার এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কার্ডের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টির ওপর খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, স্মার্টকার্ড টিকিটিং ব্যবস্থা চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এটিএম বুথে যেমন প্রথমে কার্ড দিতে হয়, তারপর টাকা আসে। একইভাবে ডিএমটিসিএল বুথে টাকা দিলে টিকিট বের হয়ে আসবে। আবার কাউন্টারও থাকবে। থাকবে মাসিক কার্ড। তা নির্ধারিত মেশিনের মাধ্যমে রিচার্জ করা যাবে। রিচার্জ করার স্থান চূড়ান্ত করা হচ্ছে। ভারতের দিল্লিতেও মেট্রোরেলের ভাড়া পরিশোধে একই ব্যবস্থা চালু আছে।

টিকিট ছাড়া মেট্রোরেলের ট্রেনে ঢোকা যাবে না। টিকিট/রিচার্জ করা কার্ড ছাড়া ট্রেনের কোচের দরজা খুলবে না। ডিএমটিসিএল জানায়, বিনা টিকিটে (বিনা ভাড়ায়) মেট্রোরেলে চড়লে ভাড়ার ১০ গুণ জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এ বিধান রয়েছে ‘মেট্রোরেল বিল-২০১৫’ এ। ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে বিলটি পাস হয়।

ডিএমটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক আরও বলেন, ঢাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল অংশের মধ্যে উত্তরা-আগারগাঁও পর্যন্ত রেলপথ চালু হবে আগামী বছরের জুনে। এ লক্ষ্যে আগস্ট থেকে পরীক্ষামূলক ট্রেন পরিচালনার কাজ শুরু হবে। এ প্রকল্পের কাজ এগিয়েছে প্রায় ৬৪ দশমিক ৯১ শতাংশ।

ইতোমধ্যে জাপান থেকে ডিপো এলাকা দিয়াবাড়িতে এসেছে একাধিক ট্রেনের সেট। এগুলোর ১৯ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। 

উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৪ দশমিক ৪১ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট (উড়ালপথ) স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। উত্তরা-আগারগাঁও অংশের অগ্রগতি ৮৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের অগ্রগতি ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ। প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। ব্যয় হচ্ছে ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৬ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে জাইকা।
 
পিএসডি/এমএআর/