অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর ভুয়া মামলা : কর্ণফুলীর কর্মকর্তাদের কারসাজি
চট্টগ্রামের পটিয়ায় অ্যালুমিনিয়াম ফ্যাক্টরিতে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার ও ভুয়া এফআইআর দাখিলের অভিযোগে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের পাঁচ কর্মকর্তাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক আপেল মাহমুদ বিপ্লব বাদী হয়ে মামলাটি করেন। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম দুদকের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ।
বিজ্ঞাপন
আসামিরা হলেন- পটিয়া উপজেলার ৯ নম্বর জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গাজী মো. বখতিয়ার উদ্দিন বকুল; কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক, পরীক্ষণ ও মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগে কর্মরত প্রকৌ. মো. তাজউদ্দিন ঢালী; পিএমইসি উত্তর শাখা, বিতরণ উত্তর বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম; জোন–১১ শাখা, বিক্রয় দক্ষিণ–২ বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌ. মুহাম্মদ রিফাত নওশাদ ভূঁঞা; প্রাক্তন মহাব্যবস্থাপক প্রকৌ. মোহাম্মদ আলী চৌধুরী এবং প্রাক্তন মহাব্যবস্থাপক প্রকৌ. সুধীর কুমার সাহা রায়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে পটিয়া উপজেলার মনসারটেক এলাকায় নাম-সাইনবোর্ডবিহীন একটি অ্যালুমিনিয়াম ফ্যাক্টরিতে চোরাই সংযোগে গ্যাস ব্যবহার ধরা পড়ে। গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের সময় প্রতিবেদনেও এনামুল হক গং ও মোক্তার হোসেন বকুল মিয়ার নাম পাওয়া যায়। কিন্তু পরে চোরাই সংযোগের ঘটনায় ভিন্ন দুই ব্যক্তির নামে বিল ও জরিমানার নোটিশ পাঠানো হয়।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে কেজিডিসিএলের কয়েকজন কর্মকর্তা যোগসাজশে ভুল তথ্যভিত্তিক এফআইআর দাখিলের নথি তৈরি করেন। এমনকি পটিয়া থানায় কোনো এফআইআর রুজু না হয়েও ভুয়া কপি নথিতে উপস্থাপন করা হয়।
এতে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪০৯, ২১৭, ২১৮ ও ১০৯ ধারায় তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭–এর ৫(২) ধারায় অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ মিলেছে বলে দুদকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
দুদক জানায়, ঘটনাস্থল ও জমির মালিকানা যাচাইয়ে দলীয় কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে পরিদর্শন করেন। তদন্তে উঠে আসে, যে স্থাপনায় চোরাই গ্যাস ব্যবহার হচ্ছিল, সেটি দীর্ঘদিন ধরে গাজী বখতিয়ার উদ্দিন বকুল মেম্বারের দখলে ছিল এবং সেখানে তিনিই অ্যালুমিনিয়াম ফ্যাক্টরি পরিচালনা করতেন। তিনি চোরাই গ্যাস ব্যবহার করে ৩৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার সমপরিমাণ রাষ্ট্রীয় ক্ষতি করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যোগসাজশের প্রমাণও পাওয়া গেছে।
এমআর/এমজে