গত বছরের ৩১ মে’র মধ্যে যেতে না পারা কর্মীদের প্রথম দলে ৬০ জন কর্মীর একটি ফ্লাইট মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) মালয়েশিয়ায় পাঠা‌‌নো হ‌লো।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানায়, দীর্ঘ অপেক্ষা ও সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেও ইতোপূর্বে মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের প্রেরণ কার্যক্রম আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। ২০২৪ সালের গত ৩১ মে তারিখের মধ্যে সব ধাপ সম্পন্ন করেও বিভিন্ন জটিলতার কারণে যাত্রা করতে না পারা বাংলাদেশি কর্মীদের সরকারি উদ্যোগে বোয়েসেলেএর মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হচ্ছে। এই ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ প্রথম দফায় ৬০ জন কর্মী মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। 

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে মালয়েশিয়া বহির্গামী এসব কর্মীদের বিদায় জানান।

আসিফ নজরুল সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন  হওয়ার পরও যেতে না পারা কর্মীদের মালয়েশিয়ায় প্রেরণের এই সফলতার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রচেষ্টা এবং মালয়েশিয়া সরকারের আন্তরিকতার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর স্বপ্ন সার্থক হলো।

তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সমর্থনে আন্দোলন করার দায়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৮৮ বন্দিকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও আমরা করছি।  

প্রবাসীদের কল্যাণে বর্তমান সরকার গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে সরকার বদ্ধপরিকর। 

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংবর্ধিতদের পক্ষে মালয়েশিয়াগামী কর্মী রনি মিয়া তাদের স্বপ্ন পূরণে প্রধান উপদেষ্টার আন্তরিক উদ্যোগ এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টার নিরন্তর প্রচেষ্টার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। 

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বাংলাদেশ সফরকারী মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
 
চলতি বছরের মে মাসে (১৩-১৬) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী মালয়েশিয়া সফর করেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ২১-২২ মে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার ৩য় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় ১৭ হাজার ৭৭৭ জন কর্মীর মধ্যে ২০২৪ সালের ৩১ মে তারিখের মধ্যে মালয়েশিয়া যেতে না পারা মোট ৭ হাজার ৮৭৩ জন কর্মীকে প্রেরণের জন্য বোয়েসেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। শুধুমাত্র কনস্ট্রাকশন ও ট্যুরিজম এ দুটি খাতে কর্মী প্রেরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 

চলতি বছরের গত ৭ আগস্ট কন্সট্রাকশন লেবার এক্সচেঞ্জ সেন্টার বারহাদ (সিএলএবি) সঙ্গে কর্মী প্রেরণ বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। উদ্যোগের প্রথম ধাপে, মালয়েশিয়ার নিয়োগকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান কন্সট্রাকশন লেবার এক্সচেঞ্জ সেন্টার বারহাদ থেকে ৫০০ জন কর্মীর চাহিদা পাওয়া যায়। ইতোমধ্যে এই ৫০০ জনের মধ্যে ২৫৫ জন কর্মীর ভিসা পাওয়া গেছে এবং তাদের চূড়ান্ত গমনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।

এনআই/এসএম