ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য করতে পাঁচ সুপারিশ
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে পাঁচটি প্রধান সুপারিশ জানিয়েছে অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস অফিসারদের নির্বাচন পরিবীক্ষণ বিষয়ক ফোরাম ‘ফেয়ার ইলেকশন অ্যাডভাইজরি কমিটি’।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ জানান, ফেয়ার ইলেকশন অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব ও সরকারের সাবেক সচিব এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মো. শরিফুল আলম।
বিজ্ঞাপন
সুপারিশগুলো হচ্ছে—
১. প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে অনলাইন সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন : স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রায় ৪৩ হাজার ভোটকেন্দ্রে অনলাইনভিত্তিক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন অপরিহার্য। আনুমানিক ২০০ কোটি টাকার ব্যয় যৌক্তিক এবং নির্বাচন–স্বচ্ছতার জন্য প্রয়োজনীয়। সময়ের স্বল্পতা বিবেচনায় একক প্রতিষ্ঠানকে না দিয়ে ডিপিএম (সরাসরি ক্রয়) পদ্ধতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিকেন্দ্রীভূত উপায়ে দ্রুত ক্রয় সম্পন্ন করা যেতে পারে। নির্বাচনের পর ক্যামেরাগুলো স্কুলে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বা ভবিষ্যতের নির্বাচনে ব্যবহার করা যাবে।
বিজ্ঞাপন
২. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বডি–ওয়ার্ন ক্যামেরা : প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা কমপক্ষে দুইজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্যকে বাধ্যতামূলকভাবে বডি ক্যামেরা ব্যবহার করতে হবে। এর মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম তদারকি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
৩. মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের লটারির মাধ্যমে বদলি বা পদায়ন : নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের লটারির মাধ্যমে বদলি বা পদায়ন করতে হবে এবং নির্বাচন শেষে ১৫ দিনের মধ্যে পুনরায় তাদের বদলি নিশ্চিত করতে হবে। দায়িত্ব পালনে যারা পেশাদারিত্ব ও সততার পরিচয় দেবেন তাদের পুরস্কৃত করে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন করতে হবে এবং ব্যর্থদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান : নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই যৌথ বাহিনীর মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে, যা ভোটগ্রহণ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এতে কোনো দল বা গোষ্ঠী নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম বা কেন্দ্র দখলের মতো অপকর্মের সুযোগ পাবে না।
৫. নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সততা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিতকরণ : নির্বাচন পরিচালনায় নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সততা, নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে। তারা যেন কোনো গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে দায়িত্ব পালন করতে পারেন— সেজন্য সরকার, নির্বাচন কমিশন ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা, পর্যবেক্ষণ ও সহায়তা জোরদার করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ফেয়ার ইলেকশন অ্যাডভাইজরি কমিটির সভাপতি ও সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. খন্দকার রাশেদুল হকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচএন/এমএন