মেক্সিকো-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) মেক্সিকো পার্লামেন্টে এ গ্রুপ গঠন করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট কেনিয়া লোপেস রাবাদান রাষ্ট্রদূত আনসারীর উপস্থিতি স্বাগত জানিয়ে মেক্সিকোর সব আইনপ্রণেতার সামনে মেক্সিকো-বাংলাদেশ মৈত্রী দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। 

অনুষ্ঠান শুরুর আগে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে মেক্সিকো পার্লামেন্টের অধিবেশন কক্ষে আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেখানে তিনি কর্মরত আইনপ্রণেতাদের ভোটাভুটির কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। অনুষ্ঠানে যোগ দেন জর্ডানের রাষ্ট্রদূত আদলি কাসেম আলখালেদি এবং আইভরি কোস্টের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক কোরের ডিন রবার্ট লি।

পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সংযুক্ত সভাকক্ষে শুরু হয় মেক্সিকো-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা। উদ্বোধনী বক্তব্যে মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ডেপুটি ফ্রান্সিসকো জাভিয়ের এসত্রাদা দোমিঙ্গেস দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব, সহযোগিতা এবং পার্লামেন্টারি ডিপ্লোম্যাসির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাস, অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা এবং বিশেষভাবে বৈশ্বিক টেক্সটাইল শিল্পে বাংলাদেশের ভূমিকা উল্লেখ করেন।

রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আগামী বছর ফেব্রুয়ারির শুরুতে নোবেলজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার নৈতিক শক্তি, আন্তর্জাতিক মর্যাদা এবং মানবিক মূল্যবোধের প্রতি আজীবন অঙ্গীকার-আমাদের গণতান্ত্রিক পুনরুদ্ধারে নতুন আস্থা তৈরি করেছে।

রাষ্ট্রদূত আগস্ট ২০২৪-এর ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা স্মরণ করে বলেন, গত আগস্টে আমাদের ছাত্রসমাজ, শ্রমজীবী মানুষ, নারী, শিশু, সাংবাদিক হাজারো নাগরিক অকল্পনীয় ত্যাগ স্বীকার করে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে এনেছে। তাদের আত্মত্যাগ নতুন ইতিহাস রচনা করেছে।

তিনি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তি রচনা করা জাতীয় নেতাদের অবদান তুলে ধরে বলেন, ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দীর্ঘ সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন। আর ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের জাতীয় পরিচয়ের ভিত্তি গড়ে তোলেন এবং পরবর্তী সময়ে সরকার পরিচালনার দায়িত্বে এসে প্রবর্তন করেন বহুদলীয় গণতন্ত্র।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, মেক্সিকোর শক্তিশালী ও উন্মুক্ত সংসদীয় চর্চা গণতন্ত্রের পথে রূপান্তর মান দেশগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা। বাংলাদেশের নবগঠিত সংসদও সেই স্বচ্ছতার পথেই এগোচ্ছে।

এনআই/জেডএস