অনলাইনে ইনভেস্টমেন্টের ফাঁদে ফেলে কোটি টাকা আদায়, প্রতারক গ্রেপ্তার
টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন ইনভেস্টমেন্টের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া একটি প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য নাদিমকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে তার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
অসীম উদ্দিন খান বলেন, একটি বেসরকারি ব্যাংকের একজন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসারের হোয়াটসঅ্যাপে অজ্ঞাত নম্বর থেকে একটি বার্তা আসে। বার্তা প্রেরণকারী নিজেকে নাজনীন নামে পরিচয় দিয়ে দাবি করে যে, তিনি ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম আপ-ওয়ার্কের প্রতিনিধি। বাসায় বসে পার্ট-টাইম কাজের মাধ্যমে আয় করার প্রলোভন দেখালে ভুক্তভোগী সরল বিশ্বাসে প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন। প্রথমে ইউটিউব সাবস্ক্রিপশনসহ কয়েকটি ছোট অনলাইন টাস্ক করিয়ে ভুক্তভোগীর মোবাইল আর্থিক সেবার (বিকাশ) মাধ্যমে সামান্য অর্থ ১৫০ টাকা, পরে ২ হাজার ১০০ টাকা প্রদান করে আস্থা তৈরির চেষ্টা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এরপর তাকে @upworkfrontdesk2013 নামক একটি টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত করা হয়, যেখানে ভুয়া সদস্যরা অভিনয় করছিলেন যে তারা নিয়মিত কাজ করে বড় অঙ্কের অর্থ উপার্জন করছেন। এতে ভুক্তভোগীর বিশ্বাস আরও বৃদ্ধি পায়। পরবর্তী ধাপে বড় টাস্কের কথা বলে প্রতারকরা ক্রিপট অ্যাকাউন্ট খুলতে ২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে বলে। এরপর জানানো হয়, আরও ৩ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলে তার ব্যালেন্স ৭ হাজার টাকা জমা হবে এবং তিনি অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন। ভুক্তভোগী টাকা পাঠানোর পর তাকে ভিআইপি টাস্ক গ্রুপে যুক্ত করা হয়। গ্রুপে দেখানো হয় যে সবার ক্রিপট অ্যাকাউন্টে ৭ হাজার টাকা জমা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী এই টাকা উত্তোলন করতে চাইলে তাকে জানানো হয়, ক্যাশ আউটের জন্য আরও ১৫ হাজার ৮০০ টাকা দিতে হবে। সরল বিশ্বাসে তিনি এই টাকা দেন। তবে ব্যালেন্সে অসঙ্গতি দেখা দিলে তিনি বিষয়টি জানতে চাইলে নতুন টাস্ক ও নতুন শর্ত আরোপ করা হয়। এভাবে একের পর এক টাস্ক, বড় লাভের লোভ এবং ভুয়া হিসাব দেখিয়ে প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে মোট ১ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৩০৫ টাকা হাতিয়ে নেয়।
পরে ভুক্তভোগী গত মে মাসে ডিএমপি লালবাগ থানায় একটি মামলা করলে এই মামলার তদন্তভার পায় সিআইডি। এরপর নাদিমকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এ সময় তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, এনআইডিসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করা হয়
এমএসি/এমএন